আমেরিকার সঙ্গে ঠান্ডা লড়াইয়ের মাঝে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে রাশিয়ার। চলতি মাসেই ভারত সফরে আসতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফলে ২০২১ সালের পর আবার দিল্লি আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের আবহে পুতিনের এই ভারত সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সামরিক আদানপ্রদানের জেরে ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যে পূর্বেই ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্যের পর ফের আরও ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করেছে আমেরিকা। এই আবহে একদিকে চিনের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর চেষ্টায় কেন্দ্রের মোদী সরকার, আবার রাশিয়ার সঙ্গেও উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে ভারত। তারই ফলস্বরূপ খুব শীঘ্রই ভারত সফরে আসতে চলেছেন পুতিন।
সম্প্রতি রাশিয়া সফররত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে উল্লেখ করে এক রুশ সংবাদমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে। ওই সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, আগস্টের শেষে নয়াদিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে পারেন পুতিন। এমনটাই আভাস দিয়েছেন অজিত ডোভাল। যদিও তার আগেই এসসিও সম্মেলনে সাংহাইতে মোদি ও পুতিনের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, দুজনেই এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।
মস্কোর সংবাদমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্স সূত্রে পাওয়া খবর, অজিত ডোভালই নাকি রুশ প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের কথা জানিয়েছেন। তাঁকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যম বলেছে, ‘আমাদের মধ্যে অর্থাৎ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বরাবর একটা বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সেই সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দিই। নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সমস্ত বিষয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভারত সফর নিয়ে আমরা খুব আনন্দিত। এখন দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষামাত্র।’
উল্লেখ্য, রুশ তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের লক্ষ্মণরেখা মানেনি ভারত। ট্রাম্পের ‘শুল্কবাণ’ অর্থাৎ ভরতীয় পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক ধার্যের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেছে মোদী সরকার। উপরন্তু গত মঙ্গলবারই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মস্কো সফরে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, তেল আমদানি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বড় চুক্তির লক্ষ্যেই মস্কো সফরে গিয়েছেন ডোভাল। সেই চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে আমদানিকৃত সেই তেলে আরও বেশি পরিমাণে ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের। ফলে ট্রাম্পের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ভারত যে রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চলেছে সে বিষয়ে আর কোনও সংশয় নেই।