ইসরোর অভিযান ব্যর্থ, তৃতীয় ধাপেই লক্ষ্যভ্রষ্ট ১০১-তম স্যাটেলাইট

ব্যর্থ হল ইসরোর ১০১-তম উৎক্ষেপণ অভিযান। মহাকাশে ইওএস-০৯ কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) পাঠানোর জন্য ইসরোর রকেট রবিবার সকালে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু রকেট থেকে ওই কৃত্রিম উপগ্রহটিকে মহাকাশে প্রতিস্থাপন করা যায়নি। উৎক্ষেপণের ২০৩ সেকেন্ডের মধ্যে মিশনের তৃতীয় ধাপে সমস্যা দেখা দেওয়ার পরই তা বাতিল করে দেওয়া হয়। এই অভিযান সফল হলে, ভারতের প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ, বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো যেত এই স্যাটেলাইটকে। ইসরো চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন বলেন, ‘প্রথম দুটি ধাপ মসৃণভাবে সম্পন্ন হলেও, তৃতীয় ধাপে এসে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে এই মিশন সম্পূর্ণভাবে সফল বলা যাচ্ছে না।’

রবিবার ভোর ৫টা ৫৯ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ইওএস-০৯ নিয়ে রওনা দেয় পিএসএলভি-সি৬১ রকেট। উৎক্ষেপণ সফল হলেও তৃতীয় ধাপে গিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। সেই কারণে অভিযান বাতিল করে দেওয়া হয়। সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, ‘আজ ১০১-তম মিশন শুরু করা হয়েছিল। পিএসএলভি-সি৬১ দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তৃতীয় ধাপে একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণের কারণে এই মিশন শেষ করা গেল না।’

১৬৯৬ কেজির ইওএস-০৯ স্যাটেলাইটটি তৈরিই হয়েছে সি ব্যান্ডের এসএআর ব্যবহার করে সমস্ত মরশুমের ছবি তোলার জন্য। কিন্তু ৫২৪ কিমি সান-সিংক্রোনাস পোলার অরবিটে সেটিকে প্রতিস্থাপন করা গেল না। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, তৃতীয় ধাপেই থমকে যায় মিশন। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম ইসরোর কোনও কৃত্রিম উপগ্রহ লঞ্চের পরিকল্পনা ব্যর্থ হল। কী কারণে এই গোলযোগ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছেন ইসরোর ইঞ্জিনিয়ারেরা। ইতিমধ্যে একটি ব্যর্থতা বিশ্লেষণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে।


ইসরোর প্রধান বলেন, ‘আজ আমরা ইওএস-০৯ কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) উৎক্ষেপণের চেষ্টা করেছিলাম। উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়ায় চারটি ধাপ ছিল। দু’টি ধাপ প্রত্যাশামাফিকই শেষ হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ত্রুটি ধরা পড়ে। এই ধাপে কঠিন জ্বালানির সাহায্যে কৃত্রিম উপগ্রহটিকে মহাকাশের নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রতিস্থাপিত করার কথা ছিল রকেটটির। কিন্তু তার জন্য যে চাপের প্রয়োজন ছিল, পরে তা অনেকটা কম বলে ধরা পড়ে। তখনই বোঝা যায়, এই অভিযান সম্পন্ন হবে না। আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দ্রুত আবার ফিরব।’

প্রসঙ্গত, ৪৬ বছর আগে শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছিল প্রথম উপগ্রহ। আর ২০১৭ সাল থেকে পিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযানের উৎক্ষেপণ করে আসছে ইসরো। এখনও পর্যন্ত এই রকেট ৬৩টি উৎক্ষেপণে ব্যবহার করা হয়েছে। তার মধ্যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তিনটি মিশন।