কংগ্রেস জমানায় নাকচ হয়েছিল তিনবার, কোবিন্দের স্বাক্ষরে ফোনে আড়িপাতা এখন ‘আইন’

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। (File Photo: IANS/RB)

২০১৫ সালের মার্চ মাসেই বিজেপি শাসিত গুজরাতের বিধানসভায় পাশ হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ফোনে আড়িপাতার অনুমােদিত বিলে স্বাক্ষর করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এই বিলের নাম গুজরাত কন্ট্রোল অব টেরােরিজম অ্যান্ড অর্গানাইজড ক্রাইম (জিসিটিওসি) বিল।

এই বিলের মূল বিশেষত্ব হল, এখন থেকে প্রশাসন চাইলেই যে কোনও সময়ে যে কোনও ব্যক্তির ফোনে আড়ি পাততে পারবে, এবং সেই রেকর্ডের কথােপকথন আদালতে প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে।

রাষ্ট্রপতির এই বিলে সই করার কথা ঘােষণা করেন গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী প্রদীপসিং জাদেজা। এই বিলটি স্বাক্ষরের জন্য ২০০৪ সাল থেকে এর আগে তিনবার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের জমানায়। কিন্তু সেই সময় একবারও ওই প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়নি রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজেপি শিবিরের থেকে কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি হতেই এই বিলে সম্মতি মিলল।


আগে যখন রাষ্ট্রপতির কাছে এই বিল পাঠানাে হয়েছিল তখন আবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন নরেন্দ্র মােদি-ই। ফলে দুয়ে দুয়ে চার করতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তবে তিনবার রাষ্ট্রপতির কাছে ধাক্কা খাওয়ার পর বিলটিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল। কিন্তু, যেই কারণে এত বিতর্ক, সেই আড়িপাতার বিষয়টি রয়েই গিয়েছিল বিলে। এই বিল আইনের পূর্ণতা পাওয়ার পর গুজরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আরও কড়া হাতে লড়তে এবার আরও সুবিধা হবে। এছাড়াও চিটফান্ড, নার্কোটিক্স পাচার এবং অপহরণের মতাে মামলার ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে উপকারী হবে এই আইন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপান্তরিত হল’, এমনটাই জানান তিনি।

ঠিক যেই সময় ফোনে আড়িপাতা নিয়ে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। গােপনীয়তা, মানুষের মৌলিক অধিকারও খর্ব হচ্ছে, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রপতির এই বিলে স্বাক্ষর করা বহু প্রশ্ন খাড়া করে দেয়। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খােদ সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু, সন্ত্রাসবাদ-কে ঢাল করে নােটবন্দি থেকে শুরু করে আড়িপাতার মতাে সংবেদনশীল বিষয়ে কেন্দ্র তথা রাষ্ট্রপতির অনুমােদন যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করছে, তা আলাদা করে না বলে দিলেও চলে।