দেশের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে আরও উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্যে ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টেসলা সিইও মাস্কের সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি লেখেন, ‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দেশে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’ সেই সঙ্গে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকার অংশীদার হতে চায় ভারত।’ ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের আবহে প্রযুক্তি ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা বিশেষ তাতপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণের পর আমেরিকা সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওয়াশিংটন ডিসিতে দুজনের বৈঠক হয়। সেই বিষয় নিয়েও মাস্কের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোদী। মোদী লেখেন, ‘আমরা মহাকাশ, গতিশীলতা, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম – যা নিয়ে ইলন বিশেষভাবে আগ্রহী। ভারতের সংস্কার ও ‘ন্যূনতম বাধা, অধিকতম প্রশাসন’ নীতি সম্পর্কেও আমি অবহিত করেছি তাঁকে।’
প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়াশিংটন ডিসি-র বৈঠকে মহাকাশ বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ভারত ও আমেরিকার অগ্রগতি প্রসঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মাস্ক। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়ে বলেও জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে এই বৈঠক হয় বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়।
আমেরিকার রাজনীতিতে ইলন মাস্কের প্রভাব কারও অজানা নয়। ট্রাম্পের সরকারে তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম। দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার পরে মাস্ককে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন ট্রাম্প। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্ণমেন্ট এফিসিয়েন্সি -র মাথায় তাঁকে বসানো হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের সমস্ত খরচের হিসেব রাখে এই দপ্তর।
অন্যদিকে মোদী ও মাস্কের এই কথোপকথন এমন এক সময়ে হয়েছে যখন ইলন মাস্কের সংস্থাগুলি, বিশেষত টেসলা এবং স্টারলিঙ্ক ভারতে প্রবেশের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। টেসলা ভারতে একটি উৎপাদন ইউনিট স্থাপনের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করছে। একই সময়ে, স্টারলিঙ্ক ভারতে উপগ্রহ সংক্রান্ত ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহ করতে এয়ারটেল এবং জিওর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে
উল্লেখ্য, ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিলেন ইলন মাস্ক। ভারতও কয়েকদিন আগে জানিয়ে দেয় যে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বণ্টনের ক্ষেত্রে নিলাম হবে না। বরং প্রশাসনিকভাবে স্পেকট্রাম বণ্টন করা হবে। বরাবরই এই নিলাম পদ্ধতির বিরোধিতা করে এসেছেন ইলন মাস্ক। এই পরিস্থিতিতে এয়ারটেল এবং জিও-র সঙ্গেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছে মাস্কের স্পেসএক্স। ভারতে প্রতিযোগীদের মোকাবিলা করার বদলে তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে মাস্কের সংস্থা।