পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে বসবাসকারী মানুষ ভারতীয় পরিবারের অংশ। একদিন তাঁরা স্বেচ্ছায় ভারতে ফিরে আসবেন। বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ইসলামাবাদের সঙ্গে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েই কথা হবে। সিআইআই বিজনেস সামিটে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজনাথ সিং পাকিস্তানের প্রতি ভারতের নীতির রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দিল্লি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার কৌশল নতুন করে সাজাচ্ছে। এদিন আবার একবার পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আক্রমণ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
রাজনাথ বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ আমাদের, আমাদের পরিবারের অংশ। আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে যে, আমাদের ভাইয়েরা, যাঁরা আজ ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন, তাঁরাও একদিন তাঁদের মনে তাগিদ অনুভব করবেন এবং ভারতের মূল স্রোতে ফিরে আসবেন।’ তিনি আরও বলেছেন যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশির ভাগ মানুষই ভারতের প্রতি গভীর টান অনুভব করেন। তাঁর মতে, সেখানকার কিছু মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছে, ভুল বুঝিয়ে প্রতারিত করা হয়েছে। রাজনাথ বলেন, ‘ভারত সবসময়ই হৃদয়ের সংযোগের কথা বলে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, ভালোবাসা, ঐক্য ও সত্যের পথে চলতে চলতেই একদিন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ, যাঁরা আমাদের দেশের নিজেদের অংশ, তাঁরা ভারতে ফিরে এসে বলবেন, আমি ভারতীয়, আমি ফিরে এসেছি।’
রাজনাথ তাঁর বক্তৃতায় পাকিস্তানের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের ব্যবসা লাভজনক নয় এবং এর জন্য উচ্চ মূল্য দিতে হয়। একথা ইসলামাবাদ এখন বুঝতে পেরেছে। ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরিচয় সিঁদুর অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তান-সহ গোটা বিশ্ব পেয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন রাজনাথ। তিনি বলেছেন, ‘এটা প্রমাণিত যে, যেকোনও শত্রুর বর্ম ভেদ করার ক্ষমতা আমাদের আছে। আমরা আরও অনেক কিছুই করতে পারতাম, কিন্তু আমরা সংযম দেখিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ভারত একাধিকবার বার্তা দিয়ে এসেছে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসলে শুধু দু’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, সন্ত্রাসবাদ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর সমস্যা। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও দিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘বাণিজ্য এবং সন্ত্রাসবাদ পাশাপাশি চলতে পারে না। জল এবং রক্ত পাশাপাশি বইতে পারে না।’ বৃহস্পতিবার রাজনাথের কণ্ঠেও তারই প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে।