কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের জন্য অবসর-পরবর্তী সুবিধায় আনল বড়সড় পরিবর্তন। এতদিন সরকারি চাকরিতে পূর্ণ পেনশন পাওয়ার জন্য অন্তত ২৫ বছর সেবা করা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু নতুন নিয়মে সেই শর্ত কিছুটা শিথিল করল পেনশন ও পেনশনভোগী কল্যাণ দপ্তর। এবার থেকে যে কোনও সরকারি কর্মচারী যদি ২০ বছর বা তার বেশি সময় চাকরি করার পর যদি স্বেচ্ছায় অবসর (ভিআরএস) নেন, তিনিও পেনশন পাবেন। তবে তা হবে অনুপাতিক ভিত্তিতে।
সংশোধিত সিসিএস (ইউপিএস বাস্তবায়ন সহ এনপিএস) নিয়মাবলী, ২০২৫ অনুযায়ী—
পূর্ণ পেনশন নিশ্চিত হবে ২৫ বছরের চাকরির পর।
২০ বছর বা তার বেশি চাকরি করা কর্মীরা ভিআরএস নিলে ‘প্রো-রাটা’ হারে পেনশন পাবেন।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, যদি কেউ ২২ বছর চাকরির পর অবসর নেন, তবে তিনি পূর্ণ পেনশনের ২৫ ভাগের ২২ ভাগ অর্থ পাবেন।
অবসর নেওয়া কর্মীরা আগের মতোই আরও কয়েকটি সুবিধা পাবেন। সেগুলি হল– ব্যক্তিগত তহবিলের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ অর্থ এককালীন তোলা যাবে, চাকরির প্রতিটি ছ’মাসের জন্য মূল বেতন ও ডিএ–র এক-দশমাংশের সমান অর্থ এককালীন তোলা যাবে, অবসরকালীন গ্র্যাচুইটি, ছুটির নগদীকরণ ও সিজিইজিআইএস–এর সুবিধাও বহাল থাকবে।
ভিআরএসের পরে কর্মীর মৃত্যু হলে, তাঁর আইনত স্ত্রী বা স্বামী পারিবারিক পেনশন পাবেন। এমনকি নিশ্চিত অর্থপ্রদান শুরুর আগেই মৃত্যু হলে, মৃত্যুর তারিখ থেকে ওই সুবিধা কার্যকর হবে।
প্রসঙ্গত, সরকারি কর্মীদের একাংশের মতে, ২০ বছরের চাকরির পর ভিআরএস নিলে পেনশন সুবিধা চালুর দাবি করা হচ্ছিল বহু বছর ধরে। নতুন নিয়মে সেই দাবি পূরণ হওয়ায় কর্মীরা আর্থিক নিরাপত্তা পাবেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে সরকারের আর্থিক দায় আরও কিছুটা বাড়তে পারে।
পেনশন মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, ‘নতুন নিয়ম কর্মীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে। যাঁরা ব্যক্তিগত কারণে পূর্ণ ২৫ বছর চাকরি করতে পারেন না, তাঁরাও এখন পেনশনের আওতায় আসবেন। এতে অবসরের পর তাঁদের জীবনযাত্রা অনেকটাই নিশ্চিন্ত হবে।’ হাজার হাজার সরকারি কর্মচারীর কাছে এই নতুন নিয়ম নিঃসন্দেহে বড় স্বস্তির খবর।