সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত হওয়ায় ব্যাপক জলের অভাবে ভুগছে পাকিস্তান। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়। কাশ্মীরে পহেলগাম হামলার প্রত্যাঘাতে অপারেশন সিন্ধু চালায় ভারত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এরপরই ভারতের তরফে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা হয়।
সিডনির ‘ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস’ নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।‘ইকোলজিক্যাল থ্রেট রিপোর্ট ২০২৫’ নামের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কৃষিকাজের ৮০ শতাংশই নির্ভর করে সিন্ধুর জলের উপরে।
পাকিস্তানের বাঁধের জলাধারে মাত্র ৩০ দিন জলধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই জলের ব্যবস্থা না হলে সমস্যার পড়তে পারে পাকিস্তান। রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। সিন্ধু নদের গতিপথের ঢাল দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। নদটি মানস সরোবর থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তারপর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে প্রায় ৩,১৮০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে আরব সাগরে পড়েছে। ফলে ভারত সিন্ধু জলচুক্তি রদ করায় পর্যাপ্ত জল পাচ্ছে না পাকিস্তান।
১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জলচুক্তি স্বক্ষরিত হয়। বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় এই জলচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। জল চুক্তির মাধ্যমে সিন্ধুর ছ’টি নদীর মধ্যে ইরাবতী, বিপাশা এবং শতদ্রু নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে। অন্যদিকে, ঝিলাম ও চন্দ্রভাগা নদীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে পাকিস্তানের হাতে। ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং ১৯৯৯ সালে তিনটি বড় যুদ্ধের পরেও দুই দেশের মধ্যে জলচুক্তি বজায় ছিল। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
সেচের জলের উপর পাকিস্তান মূলত নির্ভরশীল। নদী থেকে খাল কেটে সেই জল চাষের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই প্রথাকে ক্যারেজ বলা হয়। অপারেশন সিঁদুরের পর সিন্ধুর জল আটকে দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে সেখানকার চাষবাস। শুকিয়ে গিয়েছে পাঞ্জাব-সহ একাধিক প্রদেশের খাল।