পহেলগামের ঘটনা গোটা ভারতকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এতদিন কাশ্মীরে নানা জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটলেও এই প্রথম কাশ্মীরে জঙ্গিদের হামলার শিকার পর্যটকরা। পাকিস্তানী মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় প্রাণ হারাতে হয়েছে ২৬ জন পর্যটকে। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী লস্করের ‘ছায়া সংগঠন’ দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট বা টিআরএফ গতকালই হামলার দায় স্বীকার করেছে। জঙ্গি হামলার খবর পাওয়া মাত্র নিজের সৌদি সফর বাতিল করে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জঙ্গিদের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই ঘটনার পর বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে দেখা গেল সেনা সর্বাধিনায়ক এবং তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করতে। জানা গিয়েছে এই বৈঠকে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরীহ পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বৈঠকের পর আরেকটি যে বিষয় নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে, সেটি হল বর্তমান পরিস্থিতিতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতে ভারত কি পালটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক শুরু করবে!
এই বৈঠকের পর পহেলগামের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দিল্লির একটি অনুষ্ঠান থেকে জানালেন, ‘কাউকে রেয়াত করা হবে না। কিছু সময়ের মধ্যেই যোগ্য জবাব মিলবে।’ রাজনাথ আরও জানিয়ে দেন পাকিস্তানের হাতে সময় খুব কম। ভারত কাউকে ভয় পায় না, জঙ্গিদের কড়া জবাব দেওয়া হবে। যা জরুরি ও উপযুক্ত এই পরিস্থিতিতে, ভারত সরকার সেই সব কাজ করবে। ফল বোঝা যাবে খুব শিগগিরি। আর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই হুঙ্কারের পর পাকিস্তানের ওপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের খবর আরও জোরদার হল।
মঙ্গলবার জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। ভূস্বর্গের পহেলগামে ২৬ জন পর্যটককে খুন করেছে সন্ত্রাসবাদীরা। গতকালের হামলায় সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে কাশ্মীরের অর্থনীতির চালিকা শক্তি পর্যটন ব্যবসায়। বুধবার সকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে পহেলগাম এবং কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানান সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল অনিল চৌহান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পদাতিক, বিমান এবং নৌবাহিনীর প্রধানরাও। উল্লেখ্য, পহেলগাম হত্যাকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে নৌবাহিনীর এক আধিকারিকেরও। বৈঠকের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী বা সেনা সূত্রে কিছু না জানানো হলেও ঘটনার পর প্রাথমিক ভাবে গোটা উপত্যকায় জঙ্গিদের খোঁজে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়েছে সেনা।