জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে উঠল পহেলগাম প্রসঙ্গ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

জম্মু-কাশ্মীরকে ফের রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার আর্জিতে দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, পহেলগাম হামলার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। জম্মু-কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতিকেও পর্যালোচনা করতে হবে।’ কিছুদিন আগে পর্যন্ত কাশ্মীরকে হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াচ্ছিল দেশের শীর্ষ আদালত। বর্তমানে সেই শীর্ষ আদালতই বলে দিল, বাস্তব পরিস্থিতি অস্বীকার করার উপায় নেই। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিআর গাবাই ও বিচারপতি কে বিনোদের বেঞ্চে জম্মু-কাশ্মীর ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে কিনা প্রশ্ন উঠলে কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘আগে সরকারকে জবাব দিতে দিন। ঠিক কবে নাগাদ ফেরানো হতে পারে উপত্যকার পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, ৮ সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের হলফনামা চেয়েছে শীর্ষ আদালত।’

এ দিন সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা নিয়ে আবেদনের শুনানি চলছিল। জম্মু-কাশ্মীরের এক কলেজ শিক্ষক জাহুর আহমেদ ভাট ও সমাজকর্মী খুরশিদ আহমেদ মালিক আদালতে আর্জি জানিয়ে বলেন যে জম্মু-কাশ্মীরে রাজ্যের মর্যাদা না দেওয়া নাগরিকদের অধিকারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা খর্ব করার পাশাপাশি উপত্যকার পূর্ণরাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে নিয়ে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। ৩৭০ নিয়ে কাশ্মীরের মানুষের মধ্যে যেমন ক্ষোভ রয়েছে, তেমনই ক্ষোভ রয়েছে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা হারানো নিয়েও।

এ দিনের পিটিশনে দাবি করা হয় যে দুই মাসের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করলে তা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী হবে। আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ শীর্ষ আদালতের কাছে আর্জি জানান, সমস্ত পিটিশনকে যেন একসঙ্গে শুনানি করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, “নির্বাচনের পর রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম। আমাদের দেশের মধ্যে অদ্ভুত অবস্থান। আমি জানি না কেন এই ইস্যু তোলা হচ্ছে। এই রাজ্য নিয়ে জলঘোলা করা উচিত নয়। আমি তাও পদক্ষেপের আবেদন করব। ৮ সপ্তাহ সময় চাইছি।”


২০১৯ সালের ৫ অগস্ট কেন্দ্রের তরফে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলুপ্ত করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে, তা ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়। সেই সময় কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে সঠিক সময়ে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পরে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হলে, আদালতের তরফে বিধানসভা নির্বাচনের পর দ্রুত রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছিল।

সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন যে সংসদে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর জন্য যেন বিল আনা হয়।