নাগরিকত্ব আইন ও নাগকিপঞ্জী নিয়ে আজ বৈঠক বিরোধীদের

সোনিয়া গান্ধি (File Photo: IANS/AICC)

নাগরিকত্ব আইন ও নাগকিপঞ্জী নিয়ে আজ বৈঠকে বসতে চলেছে বিরােধী দলগুলি। বিরােধী ঐক্য বােঝাতে ও দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলােচনা করতে বৈঠকের আয়ােজন করা হয়েছে। তবে ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতী উপস্থিত থাকবেন না।

ভারত বনধের দিন বাম-তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিরােধীদের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না। তাঁর কথায়, ‘নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জীর বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলাম। বামদলগুলি ও কংগ্রেস নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জীর বিরােধিতার নামে যা করে বেড়াচ্ছে তা গুন্ডামি, আন্দোলন নয়’।

পাশাপাশি বিএসপি নেত্রীও কোটায় শিশুমৃত্যুর ঘটনার জন্য কংগ্রেস নেত্রী সােনিয়া গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে দায়ি করেন। তিনি বলেন, ‘কোটায় মৃত শিশুদের ঘনিষ্টদের সঙ্গে যদি সােনিয়া গান্ধি দেখা না করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশে আক্রান্তদের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন’।


সােনিয়া গান্ধি বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন বৈষম্যমূলক ও বিভাজনমূলক– দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে নতুন আইনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। ধর্মের ভিত্তিতে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন করা হবে’।

জাতীয় নাগরিকপঞ্জী ও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার জন্য রাহুল গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন প্রশান্ত কিশাের। তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে কোনও উঠতি নায়ক নন, মূলত নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত হলেও রাজনৈতিক স্ট্যাটেজিস্ট হিসেবে তাঁর গুরুত্ব বেড়ে চলেছে।

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে নাগরিকত্ব বিল ও নাগরিকপঞ্জীর বিরােধিতায় প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে টুইট করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টিকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিহারে কোনওভাবে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা হবে না’।

সংসদে নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার সময় নীতীশ কুমারের দল গােড়ায় আপত্তি জানালেও পরে সমর্থন করে। তারপর থেকে নীতীশ কুমার আপাত দুটি বিষয়ে নীরবতা পালন করে চলেছেন। গতমাসে নীতীশের দল জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, নাগরিকপঞ্জীর প্রাথমিক স্তর হিসেবে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার করা হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতাদের একাংশ হিন্দুত্ববাদী অবস্থান নিয়েছিলেন, যা দলের মতের বিরােধী– সেই পরিস্থিতিতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী ও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণকে তিনি রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার জয় বলে ব্যাখ্যা করেন।

ওয়ার্কিং কমিটির ভাষণে দলীয় নেতৃত্বের ওই অংশকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী যে ভাল কাজ তা কংগ্রেস মনে করে না। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী ২০২০, প্রকারান্তরে নাগরিকপঞ্জীর প্রথম ধাপ। নাগরিক পঞ্জীকে তিনি পক্ষপাত মূলক ও বিভাজন মূলক বলে মন্তব্য করেন। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

কংগ্রেস নেতাদের একাংশ বলেন, এনডিএ জোটে শরিক হওয়ার কারণে নীতীশ কুমার যদি জাতীয় জন সংখ্যা রেজিস্টার করতে রাজি হয়, তাহলে নাগরিকপঞ্জী করতেও তার কোনও সমস্যা থাকবে না।

প্রশান্ত কিশাের চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নাগরিকপঞ্জী খারিজ করে দিন, যা তার সঙ্গে দলের সম্পর্ককে ভাঙনের মুখে দাড় করিয়ে দিয়েছিল।