পাহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার জবাবে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ এখনও শেষ হয়নি। পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বার্তা দিলেন ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান। মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের মহোও-তে আর্মি ওয়ার কলেজে আয়োজিত ‘রণ-সম্বাদ ২০২৫’ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় সতর্ক করেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, ‘অপারেশন সিন্দুর ছিল এক মডেল সামরিক অভিযান। আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেয়েছি। কিছু শিক্ষা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে, বাকিগুলি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অপারেশন এখনও চলছে।’
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারত শান্তিপ্রিয় দেশ হলেও আত্মসমর্পণের নীতি মেনে চলবে না। তাঁর কথায়, ‘ভারত সবসময় শান্তির পক্ষেই থেকেছে, কিন্তু আমাদের শত্রুরা যেন ভুল না বোঝে— আমরা আত্মসমর্পণকারী নই। শক্তি ছাড়া শান্তি এক প্রকার কল্পনা মাত্র। যেমন লাতিন প্রবাদে বলা হয়, “যদি শান্তি চাও, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকো”।’
সিডিএস আরও বলেন, ‘উন্নত ভারতের স্বপ্নপূরণে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অপরিহার্য। একটি বিকশিত ভারতকে হতে হবে “শস্ত্রসজ্জিত” , “সুরক্ষিত” এবং “আত্মনির্ভর”। শুধু প্রযুক্তিতেই নয়, ভাবনা ও বাস্তব প্রয়োগেও আমাদের এগোতে হবে।’
ভবিষ্যতের যুদ্ধের চারটি প্রবণতা নিয়েও সতর্ক করেন তিনি। সেগুলি হল—
১. রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা বৃদ্ধি
২. যুদ্ধ ও শান্তির সীমারেখা মুছে যাওয়া
৩. মানুষের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাওয়া
৪. জয়-পরাজয়ের মানদণ্ডের পরিবর্তন
চৌহান বলেন, ‘একসময় যুদ্ধজয়ের পরিমাপ হতো ক্ষয়ক্ষতির ওপর। যেমন ১৯৭১ সালে ৯৫,০০০ পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছিল। কিন্তু আধুনিক যুদ্ধে জয় নির্ধারিত হয় অভিযানের গতি, কৌশলগত সূক্ষ্মতা এবং দূর-পাল্লার নির্ভুল আঘাতের প্রভাবে।’
জেনারেল চৌহানের এই মন্তব্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি এখন আরও সক্রিয়, আধুনিক এবং কৌশলগতভাবে শক্তিশালী হওয়ার পথে।