প্রয়াত শিল্পপতি লর্ড স্বরাজ পল, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

প্রয়াত বিশিষ্ট অনাবাসী শিল্পপতি, সমাজসেবক এবং ব্রিটেনের ‘হাউস অফ লর্ডস’-এর সদস্য লর্ড স্বরাজ পল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই খ্যাতনামা শিল্পপতির প্রয়াণে শিল্পজগৎ এবং রাজনৈতিক মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তিনি লর্ড পলের সঙ্গে তাঁর পূর্বপরিচয়ের কথা স্মরণ করে জানিয়েছেন, ‘লর্ড স্বরাজ পলের প্রয়াণে আমরা একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শিল্পপতি ও মানবসেবীকে হারালাম। তাঁর সঙ্গে বহুবার আলোচনা হয়েছে ব্যবসা ও সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে। তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়।’

এক্স হ্যান্ডলে মমতা লিখেছেন, ‘স্বরাজ পলজির মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী, একজন অসাধারণ শিল্পপতি, একজন সমাজসেবী এবং কলকাতার সঙ্গে গভীর যোগাযোগ ছিল তাঁর। আমি তাঁকে ভালোভাবেই চিনতাম। তাঁর স্নেহ পেয়েছিলাম। আমরা বাংলার উন্নয়নের জন্য যৌথ প্রচেষ্টার বিষয়ে আলাপচারিতা করেছি। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’


লর্ড স্বরাজ পলের জন্ম পাঞ্জাবের জলন্ধরে। ১৯৬৬ সালে কন্যা অম্বিকার চিকিৎসার জন্য তিনি পাড়ি দেন ব্রিটেনে। তবে চিকিৎসায় কন্যাকে বাঁচানো না গেলেও, ব্রিটেনেই থেকে যান তিনি। সেখানেই শুরু করেন শিল্পজীবন এবং প্রতিষ্ঠা করেন বহুজাতিক শিল্পগোষ্ঠী ‘ক্যাপারো গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ’। শিল্পজগতের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জনসেবা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল সুপরিচিত। ব্রিটেনের ‘হাউস অফ লর্ডস’-এ সক্রিয় সদস্য হিসেবে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটেন, উত্তর আমেরিকা, ভারত, পশ্চিম এশিয়া-সহ বিশ্বের ৪০টি জায়গায় এই সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। তাঁর ছেলে আকাশ পল ১৯৯২ সালে সংস্থার সিইও হন।

লন্ডনের ঐতিহাসিক চিড়িয়াখানা যখন বন্ধ হওয়ার মুখে, তখন তা রক্ষার জন্য যাঁরা আন্দোলনে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে লর্ড পল ছিলেন অন্যতম। শিক্ষা ও চিকিৎসাক্ষেত্রে বহু দাতব্য প্রকল্পে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ এখনও স্মরণীয়। যদিও ব্যবসার মূলকেন্দ্র ছিল ব্রিটেনে, তবু ভারতের সঙ্গে তাঁর আত্মিক যোগ ছিল আজীবন। ইন্দিরা গান্ধী থেকে নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত বহু ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই ছিল তাঁর সুসম্পর্ক। পশ্চিমবঙ্গেও বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনের পাশাপাশি তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন শিল্প, শিক্ষা এবং সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।