দলীয় সদস্য পবন বর্মার প্রকাশ্যে মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নীতিশ দলত্যাগ করার পরামর্শ দিলেন

নীতিশ কুমার (File photo: IANS)

দিল্লি নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট গঠনের প্রস্তাবে জেডি(ইউ) দলের প্রধান ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সমালােচনা করায় ঘনিষ্ঠ সদস্য পবন বর্মাকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নীতিশ কুমার পাটনায় পবন বর্মার বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে বলেছেন, তিনি চাইলে দল ত্যাগ করতে পারেন এবং যেকোনও দলে যােগ দিতে পারেন, এতে আমার শুভেচ্ছা রইল।

প্রকাশ্যে জেডি (ইউ)-এর বিজেপির সঙ্গে জোট করার সমালােচনা করে। বিবৃতি দেওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। পবন বর্মা সিএএ নিয়ে নীতিশ কুমারের স্পষ্ট বক্তব্য জানতে চেয়েছেন। তিনি কেন দিল্লির নির্বাচনে জেডি(ইউ) দলের জোট গঠনের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, এতেই চটেছেন নীতিশ।

জেডি(ইউ) দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, প্রাক্তন রাজ্যসভা সদস্য এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পবন বর্মা মঙ্গলবার নীতিশ কুমারকে টুইট করে দিল্লির নির্বাচনে দলের বিজেপির সঙ্গে জোট করার প্রস্তাবে হতচকিত হয়েছেন বলে জানান। ব্যক্তিগত স্তরে আলােচনায় নীতিশ কুমার বিজেপি ও তার চালিকাশক্তি আরএসএস’র বিরুদ্ধে মতপােষণ করা সত্ত্বেও এমন দ্বিচারিতার কোনও মানে হয় না বলে তিনি টুইটে উল্লেখ করেন।


নীতিশ কুমার সাংবাদিকদের জানান, দলের কোনও সদস্যের কোনও প্রশ্ন থাকলে তা দলের সভায় আলােচনার সুযােগ রয়েছে। কিন্তু এমন প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে কোনও আলােচনা ছাড়াই বক্তব্য পেশ করায় দলের ক্ষতি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, বিরুদ্ধ মত পােষণ করার এটা কি সঠিক পদ্ধতি?

নীতিশ কুমার জানান, বিজেপি দলের কর্মকর্তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পবন বর্মার বক্তব্য জেডি(ইউ)-এর নয়, তা সম্পূর্ণভাবে তা^র ব্যক্তিগত মত। কারণ পবন বর্মা জেডি(ইউ) দলের প্রধানের ব্যক্তিগত মত ও দলের মতকে এক করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

নীতিশ কুমারের বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের পবন বর্মা জানান, দলত্যাগ তাে সকলের পক্ষেই সম্ভব। তবে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের নেতাকে আঘাত করার জন্য বক্তব্য তিনি পেশ করেননি। বরং দলের ভিতরে ভিন্ন মত আলােচনার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। তিনিই পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন।

পবন বর্মা তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময়ে নীতিশ কুমার বিজেপি ও আরএসএস জোটের সমালােচনা করেছেন। কিভাবে জেডিইউ বিহারের বাইরে গিয়ে বিজেপিকে সমর্থন জানাচ্ছে, যেখানে দীর্ঘদিনের শরিক অকালি দল ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট গঠনে রাজি হয়নি সেখানে জেডিইউ কেমন করে শরিক হতে পারে। আর কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যখন সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর-এর মতাে সামাজিক বিভাজনের বিষয়গুলি চাপিয়ে দিতে চাইছে। এতে দেশের শান্তি, সংহতি ও স্থায়িত্বে চরম আঘাত করার চেষ্টা হচ্ছে।

চিঠিতে পবন বর্মা স্মরণ করিয়েছেন, প্রথম সাক্ষাতে ২০১২ সালে আরএসএস মুক্ত ভারতের কথা বলেছিলেন। এমনকী ২০১৭ সালে লালু যাদব ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভাঙার পর তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট গড়েন। কিন্তু বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব তাঁর প্রতি অপমানজনক মন্তব্য করেছে বলেও জানান ব্যক্তিগতভাবে।

ক্ষুব্ধ নীতিশ কুমারের বক্তব্য দলের অন্যদেরও সতর্ক করার জন্য বলে মনে করছে তথ্যভিজ্ঞ মহল। কারণ নাগরিক সংশােধনী আইন নিয়ে সম্প্রতি অন্য এক সদস্য প্রশান্ত কিশােরও মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য জানতে চেয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। কারণ সংসদে জেডিইউ বিজেপির আনা বিলকে সমর্থন জানায়। পরে নীতিশ কুমার দলের বৈঠকে সিএএ’র সমালােচনা করেন। আর এনআরসি প্রয়ােগে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধ মত পােষণ করেন।