উদয়পুরের হাসপাতালে সদ্যোজাত শিশুবদল, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় দুই পরিবার

 রাজস্থানের উদয়পুরের একটি হাসপাতালে ৪৩ মিনিটের ব্যবধানে জন্ম নেয়  এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান। সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে ঘিরে দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয় বিবাদ। দুই পরিবারেরই দাবি যে, পুত্র সন্তানটিই তাঁদের। কোন সন্তান কোন পরিবারের তা নিশ্চিত করার জন্য দুই নবজাতকের মা-বাবার ডিএনএ নমুনা জয়পুরের ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।

২১ অক্টোবর উদয়পুরের অনিতা রাওয়াত এবং চিতোরগড়ের রামেশ্বরী সোনি এমবি হাসপাতালে একই অপারেশন থিয়েটারে নিজেদের সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ উঠেছে যে, প্রথমে পুত্র শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় অনিতার কোলে। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই শিশুটিকে ফেরত নিয়ে যায় এবং তাঁর কোলে তুলে দেয় এক কন্যা সন্তান। অনিতার স্বামী সুনীল রাওয়াত জানান, ‘আমরা সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানাই এবং হাতি পোল থানায় অভিযোগ করি।

পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ফরেনসিক টিম আসে এবং দুই পরিবারেরই ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে।‘  রাওয়াত পরিবার জানিয়েছে যে, কন্যা শিশু নিয়ে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই কিন্তু ডিএনএ রিপোর্ট এলে তবেই তাঁরা শিশুটিকে গ্রহণ করবেন। সুনীল বলেছেন যে, তাঁরা শিশুটিকে মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত করতে চান না। তাই তাঁরা আপাতত শিশুটিকে আগলে রাখছেন। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসবে ১৫ দিন পর। ততদিন তাঁরা হাসপাতালের ওয়ার্ডেই থাকবেন।


দুই পরিবারই ডিএনএ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কন্যা শিশুটিকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজমাধ্যমে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে জনস্বার্থে সরকারের তরফ থেকে এত প্রচারের পরেও কেন পুত্র সন্তান নিয়ে এত পক্ষপাতিত্ব এখনও করা হচ্ছে? এই ঘটনাটি ঘটেছে  দীপাবলির সময়। যে সময় সারা দেশ জুড়ে ‘নারীশক্তি’র আরাধনায় মানুষ নিবেদিতপ্রাণ, সেই সময় এক সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে গ্রহণ করতে দুই পরিবারের অনিচ্ছাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে জনরোষ।

এই ঘটনার একদিন পর, এমবি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাক্তার আর এল সুমন জানিয়েছেন, হাসপাতাল নিজেদের পক্ষ থেকে তদন্ত করে দুই শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং দুই পরিবার তাতে সম্মতও হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘উদয়পুরের অনিতা রাওয়াতের কন্যাসন্তান এবং চিতোরগড়ের রামেশ্বরী সোনির পুত্রসন্তান, তদন্তে এই সত্যই প্রকাশিত হয়েছে। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যাঁর গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে তাঁর বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘