চাল উৎপাদনে নতুন ইতিহাস, চিনকে টপকে বিশ্বে এক নম্বর ভারত

বছরের শেষে কৃষিক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করল ভারত। চিনের দীর্ঘদিনের আধিপত্য ভেঙে চিনকে পিছনে ফেলে বিশ্বের সর্বাধিক চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে শীর্ষস্থানে উঠে এল ভারত। মার্কিন কৃষি গবেষণা সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-র ডিসেম্বর ২০২৫ রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ২৮ শতাংশই হচ্ছে ভারতে।

ইউএসডি-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ভারতের মোট চাল উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫২ মিলিয়ন মেট্রিক টনে। অন্যদিকে চিনের উৎপাদন ১৪৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এতদিন ধরে ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী দেশ ছিল, তবে এই প্রথমবার উৎপাদনের নিরিখে চিনকে ছাপিয়ে শীর্ষে পৌঁছল দেশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি চালের বিপুল বৈচিত্র্য। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার প্রজাতির চালের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার প্রজাতিই পাওয়া যায় ভারতে। ফলে গুণমান ও বৈচিত্র্য দু’দিক থেকেই ভারতের চাল বিশ্ববাজারে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।


ইন্টারন্যাশনাল রাইস ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. সুধাংশু সিংয়ের মতে, বিশ্বের সর্বাধিক চাল উৎপাদক দেশ হিসেবে ভারতের উঠে আসা শুধু কৃষিক্ষেত্রের  সাফল্য নয়, এই দৃষ্টান্ত কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।বর্তমানে ভারতের চাল রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১৭২টি দেশে, যা ধীরে ধীরে বিদেশ নীতির একটি কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠছে।

২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারত বিশ্বজুড়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি করেছে প্রায় ৪,৫০,৮৪০ কোটি টাকার।মোট রপ্তানিরকৃত পণ্যের প্রায় ২৪ শতাংশ হল চাল। শুধু বাসমতি ও অন্যান্য চাল রপ্তানি করেই গত এক বছরে ভারত অর্জন করেছে প্রায় ১,০৫,৭২০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। এই সাফল্য ভারতীয় কৃষির শক্ত ভিত ও বিশ্ববাজারে তার ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্পষ্ট ছবি তুলে ধরেছে।