রোজগারের তাগিদে বিদেশে পাড়ি দিতে বাধ্য হন ভারতীয় নাগরিকরা। বিদেশে গিয়ে অনেক সময় নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কাজ করতে গিয়ে যাতে কোনও রকমের হেনস্থার শিকার না হতে হয় তার জন্য নতুন বিল আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘ওভারসিজ মোবিলিটি (ফেসিলিটেশন অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার) বিল ২০২৫’ আনছে সরকার। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই এই বিল পেশ করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
এই বিলের মাধ্যমে ১৯৮৩ সালের ইমিগ্রেশন আইনেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত ভারতীয়দের সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ‘ওভারসিজ মোবিলিটি অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’ গঠন করা হতে পারে বলে খবর। কাউন্সিলের প্রধান হবেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব৷ সঙ্গে থাকবেন শ্রম, দক্ষতা উন্নয়ন (স্কিল ডেভেলপমেন্ট) এবং বিদেশ মন্ত্রকের দশ জন উচ্চপদস্থ কর্তা৷
সেই সঙ্গে কর্মরত ভারতীয়দের নিয়ে একটি ডেটাবেস তৈরি করবে কাউন্সিল। বিদেশে কর্মরত অবস্থায় কোনও ভারতীয় নাগরিক বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ানো হবে সহযোগিতার হাত৷ এই বিলের খসড়া সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সব মহলের মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত এলেই বিলটিকে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পেশ করা হবে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সবুজ সঙ্কেত পেলেই বিলটিকে পেশ করা হবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে।
‘ওভারসিজ মোবিলিটি (ফেসিলিটেশন অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার) বিল ২০২৫’ মাধ্যমে দেশ–বিদেশের বেশ কিছু প্লেসমেন্ট এজেন্সিকে মান্যতা দেওয়ার কথাও ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কাজের জন্য বিদেশে গিয়ে অনেক সময়ই প্রতারক এজেন্সির খপ্পরে পড়েন ভারতীয় নাগরিকরা। তা আটকাতে ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কিছু প্লেসমেন্ট এজেন্সিকে মান্যতা দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার ।
বিদেশে চাকরি করতে গেলে কোন এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে তা সহজ করতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সরকারি আমলারা। মান্যতাপ্রাপ্ত কোনও এজেন্সি আইন ভঙ্গ করলে ও প্রতারণা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। ন্যূনতম ২০ লক্ষ আর্থিক জরিমানা দিতে হবে। গোটা প্রক্রিয়াটি কাউন্সিল’-র অন্যতম প্রধান সদস্য ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ ওভারসিজ মোবিলিটি’ -এর মাধ্যমে মনিটরিং করার কথা ভাবছে বিদেশ মন্ত্রক। এই বিলের মাধ্যমে বিদেশে অবৈধভাবে ভারতীয় অনুপ্রবেশের উপরেও রাশ টানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিদেশগামী ভারতীয়দের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে ভারতের গ্লোবাল ইমেজ কলুষিত হবে না।