দেশের সর্বত্র জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরি হবে : অমিত শাহ

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Photo: IANS/RSTV)

জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে নাগরিক তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া চালু করার বার্তা দিয়ে রাজ্যসভার অধিবেশনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, সম্প্রদায় ভিত্তিক বৈষম্য না করে দেশের সর্বত্র জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরর প্রক্রিয়া চালু করা হবে, কারুর চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।

তিনি বলেন, ধর্মীয় নৃশংসতার শিকার হয়ে বৌদ্ধ, হিন্দু, শিখ, জৈন ও পার্সিরা পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে প্রাণহাতে করে পালিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে, ভারতে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করছেন- তাদের যে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত সেটা কেন্দ্র বুঝতে পেরেছে।

উচ্চকক্ষে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জী আর কিছু নয়, দেশের সমস্ত জনগণকে নাগরিক তালিকার আওতায় নিয়ে আসার একটা প্রক্রিয়ামাত্র। দেশের সর্বত্র জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি করা হবে, কারুর চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।


তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর কোথাও লেখা নেই যে অন্য কোনও ধর্মের মানুষদের তালিকাভুক্ত করা হবে না। যে কোনও ধর্মের মানুষ, যারা ভারতীয় নাগরিক তাদেরকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর তালিকাভুক্ত করা হবে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনও ধরণের বৈষম্য করা হবে না। এনআরসি ও নাগরিকত্ব বিল এক নয়, দুটো ভিন্ন বিষয়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি করা হয়েছে। সারা দেশে যখন জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে, তখন ফের অসমেও নাগরিক পঞ্জী করা হবে। কোনও জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষকে চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।

তিনি বলেন, অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর তালিকায় যাদের নাম বাদ গেছে, তারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করতে পারবে। অসমের প্রায় সব জায়গায় ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের শাখা দফতর খােলা হয়েছে। যদি কারুর ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার আর্থিক সঙ্গতি না থাকে সেক্ষেত্রে অসম প্রশাসন তাদেরকে আইনজীবী নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা করবে।

অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর তালিকা থেকে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। তাঁর কথায়, জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর চুড়ান্ত তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই নাগরিকত্ব দাবির প্রমাণ হিসেবে পর্যাপ্ত তথ্য পেশ করতে পারেনি। কেন্দ্র এখনই তাদেরকে বেআইনি বলতে রাজি নয়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন। কিন্তু গুজবে কান দেওয়ার কোনও প্রয়ােজন নেই। আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও ক্রিশ্চিয়ান শরণার্থীদের জোর করে দেশ ছেড়ে যেতে বলা হবে না। আপনাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা নাগরিকত্ব সংশােধন বিল নিয়ে আসব। তারপরই এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর ওতপ্রােত সম্পর্ক রয়েছে– দেশে ঢুকে পড়া শরণার্থীদের বলা ভাল অনুপ্রবেশকারীদের অতিরিক্ত ভার নিয়ে কোনও দেশ সাবলীলভাবে চলতে পারে না। শাহ’র বক্তব্যের সমালােচনায় মুখর হয়ে বিরােধীরা বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব বলে মুসলিমদের ভয় দেখানাের চেষ্টা করছেন।