কুনোতে মৃত্যু নামিবিয়া থেকে আসা চিতার, প্রশ্নের মুখে পুনর্বাসন প্রকল্প

মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যান থেকে এল দুঃসংবাদ। নামিবিয়া থেকে ভারতে আনা ৮ বছরের চিতা ‘নভা’-র মৃত্যু হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে গুরুতর চোটে অসুস্থ থাকার পর শনিবার তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুনো ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর উত্তম শর্মা। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, সফ্ট রিলিজ এনক্লোজারে শিকার করতে গিয়ে বাঁ পায়ে গুরুতর চোট পায় নভা। তার উলনা ও ফিবুলা হাড় ভেঙে যায়। শরীরের আরও একাধিক জায়গায় গভীর আঘাত ছিল বলে জানান শর্মা। মৃত্যুর পর চিতাটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

নভার মৃত্যুতে কুনো অভয়ারণ্যে চিতার সংখ্যা কমে দাঁড়াল ২৬-এ। এদের মধ্যে ৯টি প্রাপ্তবয়স্ক এবং বাকি ১৭টি কুনোতেই জন্ম নেওয়া শাবক। ফিল্ড ডিরেক্টরের দাবি, এই মুহূর্তে বাকি সব চিতা সুস্থ এবং স্বাভাবিক রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২৬টি চিতার মধ্যে ১৬টিকে ইতিমধ্যেই জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তারা নতুন পরিবেশে সাফল্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। নিয়মিত শিকার করছে এবং দলগত আচরণেও মানিয়ে নিয়েছে। প্রত্যেকটির উপরই নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে।

সম্প্রতি কুনোর সব চিতার উপর অ্যান্টি ইক্টো প্যারাসাইটিক ওষুধ প্রয়োগের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন শর্মা। সদ্য সন্তান প্রসব করা দুই মা চিতা – বীরা ও নির্ভা এবং তাদের শাবকরাও বর্তমানে সুস্থ। উল্লেখ্য, নভাকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে ভারতে আনা হয়েছিল চিতা পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায়। ভারতের মাটিতে চিতার আনাগোনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার এই প্রকল্পের শুরুতেই একের পর এক চিতার মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন। কুনোতে চিতা পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যকারিতা ও প্রস্তুতি নিয়েই উদ্বেগ বাড়ছে বন বিশেষজ্ঞ মহলে।


সরকারি সূত্রে এখনও পর্যন্ত প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই মত জানানো হয়েছে, তবে নভার মৃত্যুতে প্রাণীগুলির নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে আরও নজরদারির প্রয়োজনীয়তা সামনে এসেছে। প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম কোন পথে এগোয়, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে পশুপ্রেমী ও বনকর্মীরা।