পুলওয়ামা নিয়ে এবার বিরােধীদের তােপ মােদির

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS/PIB)

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাফল্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে পুলওয়ামা হামলায় নিজেদের ভূমিকার কথা মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। এ নিয়ে সরগরম দেশীয় রাজনীতি। এবার বিরােধীদের নিশানা করে আক্রমণ শানালেন খােদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। তাঁর দাবি, সন্তানহারা হয়ে শােকে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল গােটা দেশ। কিন্তু কিছু মানুষ সেই শােকে শামিল ছিলেন না। 

শনিবার সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিনটি রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে পালিত হয়। শনিবার সর্দার পটেলের ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকীতে গুজরাতে স্ট্যাচু অব ইউনিটের পাদদেশ থেকে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, আজ অফিসারদের কুচকাওয়াজ দেখে একটা দৃশ্য মনে পড়ে গেল, পুলওয়ামা হামলার দৃশ্য সন্তানহারা হয়ে গােটা দেশ শােকে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল। কিছু মানুষ সেই শােকে শামিল ছিলেন না। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির রাস্তাই খুঁজছিলেন তারা। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিন পড়শি দেশ থেকে যে খবর সামনে এসেছে, যেভাবে দেশের সংসদে হামলার কথা মেনে নিয়েছে ওরা, যাঁরা এতদিন হামলার কথা অস্বীকার করছিলেন, এতে তাদের আসল চেহারা সামনে এসে গিয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষ কতটা নীচে নামতে পারে, পুলওয়ামা হামলা-পরবর্তী রাজনীতিই তার সবচেয়ে বড় উদাত্মণ।’


প্রসঙ্গত, লােকসভা নির্বাচনের আগে গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় পাক মদতপুষ্ট এক জঙ্গি। তাতে ৪০ জন জওয়ান প্রাণ হারান। কড়া নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কীভাবে বিস্ফোরক বােঝাই গাড়ি নিয়ে ওই জঙ্গি সিআরপিএফ কনভয়ের কাছে পৌঁছে গেল, সেই সময় প্রশ্ন তােলেন বিরােধীরা। 

লােকসভা নির্বাচনের প্রচারে পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরবর্তী ভারতীয় বায়ুসেনার বালাকোট অভিযান নিয়ে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ভােট কুড়ােনাের অভিযােগও ওঠে। এ বছর পুলওয়ামা হামলার বর্ষপূর্তিতে তা নিয়ে নতুন করে মােদি সরকারকে নিশানা করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। পুলওয়ামা হামলায় কাদের সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে, প্রশ্ন তােলেন তিনি। হামলার তদন্ত নিয়েও কেন্দ্রকে এক হাত নেন রাহুল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে পাক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি বলেন, ‘ঘরে ঢুকে ভারতের উপর আঘাত হেনেছি আমরা। ইমরান খানের নেতৃত্বেই পুলওয়ামায় সাফল্য এসেছে। সেই নিয়ে শােরগােল শুরু হলেও পরে যদিও সাফাই দিতে দেখা যায় পাক মন্ত্রীকে। 

তিনি জানান, আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। আমি বলেছিলাম, পুলওয়ামার পর আমাদের বিমান ভারতের সেনা ছাউনিকে নিশানা করতে সফল হয়েছিল। নিরীহ মানুষদের মেরে সাহসিকতা প্রদর্শনে কোনও আগ্রহ নেই আমাদের। সন্ত্রাসী কাজকর্মের তীব্র বিরােধী আমরা। 

ফাওয়াদ চৌধুরি সাফাই দিলেও ততক্ষণে তার মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে। তেতে উঠেছে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে প্রশ্ন তােলায় গােটা দেশের সামনে কংগ্রেসকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে বিজেপি’র তরফে দাবি ওঠে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করে গেরুয়া শিবির। যদিও বিরােধীদের দাবি, জঙ্গি হামলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেননি তারা। নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে ওই জঙ্গি কীভাবে সেখানে পৌঁছল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন।