শিক্ষানীতির পক্ষে দাঁড়িয়ে আম্বেদকরকে স্মরণ মোদির

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS)

‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২০’ গ্র্যান্ড ফিনালের সূচনায় শনিবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বাবা সাহেব আম্বেদকর বলেছিলেন, দেশের সুলভ শিক্ষা প্রয়োজন। তার সেই ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে শিক্ষানীতিতে। বিভিন্ন স্তরে ধারাবাহিক আলোচনার পরেই কেন্দ্রীয় সরকার নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুমোদন করেছে।’

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে যে বিতর্ক চলছে দেশজুড়ে সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে ব্যাখ্যা দিলেন, কেন নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, মোদি এদিন জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে সওয়াল করতে গিয়ে বেছে নিলেন কলেজপড়ুয়াদের ভার্চুয়াল সভার মঞ্চকে।

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং অভিভাকদের মধ্যেও। স্কুলস্তরেও এই একই সমস্যা পল্লবিত হচ্ছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী এদিন জানিয়েছে, নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর হলে ১৩০ কোটি দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হবে। শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক করে তোলার লক্ষে পরিকাঠামো সংস্কার করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য।


নয়া শিক্ষা ব্যবস্থায় সেই খামতিগুলি দূর করা হয়েছে। কোনও পড়ুয়া প্রাথমিক স্তরে থেকে স্নাতক হয় ১৫ বছরে। কিন্তু বিদেশে এক্ষেত্রে ১৬ বছরের পড়াশোনা দরকার হয়। নতুন নীতিতে সেই বিদেশি ধারাই অনুসরণ করা হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতিতে লোকাল গ্লোবালের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে, এমনটাই দাবি মোদির। বিষয় বাছার ক্ষেত্রেও পড়ুয়াদের অনেক সুযোগ থাকছে। এতে তাদের মৌলিক চিন্তার বিকাশ ঘটবে। পড়ুয়াদের স্কুলব্যাগের বোঝা কমবে।

নরেন্দ্র মোদি এদিন বলেন, নতুন শিক্ষানীতি ভারতীয় ভাষার বিস্তার ঘটাবে। কারণ বিশ্বের উন্নত দেশগুলি এখন নিজের ভাষায় শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। কলেজ পড়ুয়াদের উদ্দেশে মোদির মন্তব্য, নতুন শিক্ষানীতি অনেক বেশি কর্মসংস্থানমুখী হবে। শুধু চাকরিপ্রার্থীই তৈরি করবে না, চাকরিদাতার সংখ্যাও বাড়াবে। আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পড়ুয়াদের অন্তত ৫০ শতাংশকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার লক্ষে জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করা হয়েছে।

এদিন প্রতিযোগিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মোদি একুশ শতককে জ্ঞানের যুগ বলেও বর্ণনা করেছেন। প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য, সেই সঙ্গে শিক্ষাকে আধুনিক করে ভোলাটাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন’ হচ্ছে এমন একটি প্রতিযোগিতা বা উদ্যোগ, যেখানে নানা সমস্যার সমাধান খুঁজতে পড়ুয়াদের একটি মঞ্চ তৈরি করে দেওয়া হয়। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেন ছাত্রছাত্রীরার। এবারের হ্যাকাথনে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী। তাঁদের মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে ১০ হাজার প্রতিযোগি।

এদিন ফাইনালিস্টদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল। তিনি ঘোষণা করেন, জয়ী প্রতিযোগিকে এক লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে।

এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যাঁরা থাকবেন তাঁদের দেওয়া হবে ৭৫ ও ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার। এদিন আলাপচারিতার মাঝে এক পড়ুয়া তার তৈরি একটি রেনফল প্রেডিকশন সিস্টেম বা বর্ষার আগাম অনুমান করতে সক্ষম একটি মডেলের কথা বলেন।

ওই পড়ুয়া জানান, স্যাটেলাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তার মডেলটি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। এবিষয়ে রীতিমত আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা জানান, মডেলটি কৃষকদের উপকার করবে।