অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখে দেওয়াই বিজেপির মূল লক্ষ্য। রবিবার অসমে বিশাল জনসভা থেকে ফের কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলদৈয়ের সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে ইচ্ছে করেই সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অভিবাসনকে প্রশ্রয় দিয়েছে। সেই সঙ্গে আঙুল তোলেন জাতীয় নিরাপত্তা ও উত্তর-পূর্বের স্বার্থ বিসর্জনের দিকেও।
মোদীর হুঁশিয়ারি— ‘অভিবাসীরা আমাদের কৃষক ও আদিবাসীদের জমি দখল করতে পারবে না। যারা তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করবে, তাদেরও ছাড়া হবে না। অনুপ্রবেশকারীরা এদেশের নীতি ঠিক করবে— এমনটা হতে দেওয়া যাবে না।’
তিনি ১৯৬২ সালের চিন যুদ্ধের ক্ষত স্মরণ করিয়ে কংগ্রেসকে দায়ী করেন। মোদী দাবি করেন, উত্তর-পূর্বকে বারবার অপমান করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূপেন হাজারিকাকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কংগ্রেস হেয় করেছিল। মোদীর কথায়, ‘যেদিন অসমের গর্ব ভূপেন হাজারিকাকে ভারতরত্ন দেওয়া হল, কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন নাচগানের লোকদের ভারতরত্ন দেওয়া হচ্ছে।’ মোদী প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি কি ভুল করেছি?’
রাজনৈতিক আক্রমণের পাশাপাশি উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ৬,৩০০ কোটিরও বেশি টাকার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করে জানান, ‘অসম এখন ভারতের দ্রুত উন্নয়নশীল রাজ্যগুলির অন্যতম। একসময় যে রাজ্য পিছিয়ে ছিল, আজ সেই রাজ্য প্রায় ১৩ শতাংশ বৃদ্ধির হার ছুঁয়েছে।’
পরিকাঠামো উন্নয়নের উদাহরণ টেনে মোদী বলেন, গত ছ’দশকে যেখানে মাত্র তিনটি সেতু তৈরি হয়েছিল, গত এক দশকে বিজেপি সরকার সেখানে ছয়টি বড় সেতু নির্মাণ করেছে। রাস্তা, রেল, বিমান যোগাযোগ, ৫জি ও ব্রডব্যান্ড পরিষেবার সম্প্রসারণকে তিনি কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির মূল চালক বলে ব্যাখ্যা করেন।
দুপুরে গোলাঘাট জেলার নুমালীগড়ে ৫,০০০ কোটি বাঁশের তৈরি ইথানল কারখানা উদ্বোধন করেন মোদী। পাশাপাশি নুমালীগড় রিফাইনারিতে ৭,২৩০ কোটির পেট্রো ফ্লুইডাইজড ক্যাটালিটিক ক্র্যাকার ইউনিটের শিলান্যাস করেন। তাঁর দাবি, শিল্পোন্নয়নের এই দৌড়ে উত্তর-পূর্বের অগ্রগতি গোটা দেশের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।
এদিন জাতীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক হন মোদী। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং সেনার আত্মত্যাগকে অপমান করেছে। মোদীর কটাক্ষ, ‘পাকিস্তানে যখন সন্ত্রাসবাদী নেতারা খতম হচ্ছিল, তখনও কংগ্রেস ভারতীয় সেনার পাশে না থেকে পাক সেনার সুরে কথা বলছিল। পাকিস্তানের প্রচারই কংগ্রেসের রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল।’
প্রধানমন্ত্রীর মতে, কংগ্রেসের এই ভূমিকা দেশবাসীর কাছে বিপজ্জনক। তাই জনগণকে তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।