আলওয়ার নিয়ে নোংরা রাজনীতি মোদির : মায়াবতী

মায়াবতী (Photo IANS)

সুপ্রিম কোর্ট, নির্বাচন কমিশনের কোনও দাওয়াই আটকাতে পারছে না কুকথার স্রোতকে। শাসক, বিরােধী বাক্যবাণে একে অপরকে টক্কর দিতে পিছপা হচ্ছে না। ধষর্ণের মতাে অতি মানবিক বিষয়কেও প্রচারের মঞ্চে ডেকে আনতে কার্পণ্য করলেন না স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই। তাঁকে আবার উপযুক্ত জবাব দিতে নজিরবিহীনভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসলেন বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী।

রাজস্থানে অলওয়ারে স্বামীর সামনে এক দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করে দুষ্কৃতিরা। সেই ঘটনা টেনে এনে রাজস্থানে অশোক গেহলটের কংগ্রেস সরকারের ওপর থেকে মায়াবতীর সমর্থন তুলে নেওয়ার মতাে ইস্যকেও উস্কে দেন প্রধানমন্ত্রী। রাজস্থানে এক জ্ঞানসভা থেকে মােদি বলেছিলেন, ‘দলিত মেয়ের ধর্ষণের পরও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলছেন না বাহেনজি। কুমিরের কান্না কাদছেন বহেনজি।’ মােদির কটাক্ষের উত্তরে মায়াবতীর উত্তর ছিল, ‘অলওয়ার গণধর্ষণের পর মােদি চুপ করে ছিলেন। এখন সেটা নিয়ে নােংরা রাজনীতি করছেন।’

সােমবার আরও এগিয়ে গিয়ে রীতিমতাে ব্যক্তিগত আক্রমণের পথে হাঁটলেন বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে উদ্দেশ করে মায়াবতী সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘বিজেপি নেত্রীরা তাঁদের স্বামীকে মােদির আশেপাশে দেখলেই ভয়ে আতকে ওঠেন। তাঁরা এই ভেবে ভয় পান যে, মােদি বুঝি নিজের মতাে তাঁদেরও বিবাহবিচ্ছেদ করে দেবেন।’ সেই সঙ্গে তিনি মহিলা ভােটারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমি গােটা দেশের মহিলাদের কাছে আবেদন করবাে আপনারা এমন ব্যক্তিকে ভােট দেবেন না। এটা করলে মােদির পরিত্যক্ত স্ত্রীকে সম্মান জানান হবে।’


মায়াবতীর মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের দাবি মায়াবতীকে ক্ষমা চাইতে হবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি মায়াবতীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন তিনি জনজীবন কিংবা রাজনীতিতে আসার যােগ্য নন।

২৬ এপ্রিল রাজস্থানে অলওয়ারে এক ব্যক্তি স্ত্রীকে বাইকের পিছনে বসিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় চারজন দুস্কৃতি তাদের পথ আটকায়। রাস্তার পাশে একটি মাঠে ওই মহিলাকে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতিরা। গােটা ঘটনা মােবাইলে ভিডিও করে রাখে একজন। ঘটনা জানাজানি হলে ফুটেজটি মােবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় অপরাধীরা সেই সঙ্গে মােটা টাকার দাবির হুমকি দেয় তারা।

রাজস্থানে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। সরকার গড়তে কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছে বিএসপি। বহেনজি সত্যিই উদ্বিগ্ন হলে সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিতেন তিনি। কিন্তু মায়াবতী তা করেননি বলে কটাক্ষ করেন মােদি।

মায়াবতী এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মােদিকে আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁর দাম্পত্য জীবনকেও টেনে আনতে দ্বিধা করেননি। সেই সঙ্গে মােদি ভােটের রাজনীতি করছেন বলে মায়াবতীর অভিযােগ, ‘অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মােদি চুপ করেছিলেন। কিন্তু ভােটের কারণে বিষয়টি নিয়ে নােংরা রাজনীতি করছেন, দল যাতে ভােটে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারেন। যিনি নিজেই রাজনীতির ফায়দার জন্য নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে পারেন, তিনি কীভাবে অন্য কারাের মা-বােনের সম্মান করতে পারবেন।’

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি টুইটে মায়াবতীকে আক্রমণ করে লিখেছেন, ‘বহেন মায়াবতী, নিজেকে প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করছেন তাঁর দল পরিচালনা, নীতি এবং বক্তৃতা সব সময় নিম্নরুচির। আজ প্রধানমন্ত্রীকে তিনি যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, তাতে প্রমাণ হয় তিনি জনগণের সামনেই আসারই উপযুক্ত নন।