নিখোঁজ হেমন্ত সোরেনের খোঁজ মিলল রাঁচিতে,  ৩১ জানুয়ারি তিনি ইডি -র তলবে হাজিরা দেবেন

রাঁচি, ৩০ জানুয়ারি – অবশেষে হদিশ মিলল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের। দিল্লির বাসভবন থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার পরে তাঁর খোঁজ ছিল না। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে রাঁচিতে নিজের বাসভবনে ফিরে আসেন তিনি। জমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তহবিল তছরুপের মামলায় ইডি হানা দেয় দিল্লির বাসভবনে। কিন্তু অভিযান চালিয়েও তাঁর নাগাল পাননি কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা। তারপরই হেমন্তের বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেই সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর খোঁজে দিল্লি বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করে ইডি। অবশেষে হদিশ মেলে তাঁর । জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে সড়কপথে তিনি  রাঁচির বাসভবনে এসে পৌঁছন। একইসঙ্গে তিনি ইডি-র মুখোমুখি হতে রাজি হয়েছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি তিনি ইডি -র তলবে হাজিরা দেবেন বলে জানা গেছে।

দিল্লির বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ইডি এবং বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তদন্তকারীরা। এর ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর অবশেষে খোঁজ মিলল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর। মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি রাজ্যের রাজধানী রাঁচিতে দেথা যায় তাঁকে। দিল্লি থেকে রাঁচির সরকারি বাসভবনে পৌঁছন তিনি। বাড়ি ফিরেই তিনি দলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের সঙ্গে তিনি বৈঠক বসেন। তিনি আসার আগেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, সেখানকার রাজভবন এবং রাঁচিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অফিসের ১০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
 
সোমবারই এক জমি সংক্রান্ত তহবিল তছরুপের মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর দিল্লির বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডির কর্তারা। ১৩ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালান তাঁরা। কিন্তু হেমন্ত সোরেনের দেখা পাননি। তাঁর দুটি গাড়ি এবং ৩৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। এরপর, ‘তিনি পালিয়ে গিয়েছেন’ বলে অভিযোগ করে বিজেপি। তবে, তাঁর পরিবারের এক সদস্য জানান, ‘তিনি একেবারেই পালিয়ে যাননি। তাঁর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা কাহিনী ’ তৈরি করা হচ্ছে। ২৭ জানুয়ারি তিনি রাঁচি থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দিল্লিতে তিনি ব্যক্তিগত কাজেই গিয়েছিলেন, শিগগিরই তিনি রাঁচিতে ফিরে আসবেন।’
 
তহবিল তছরুপের মামলায় গত ২০ জানুয়ারি রাঁচির বাড়িতে হেমন্ত সোরেনের বয়ান রেকর্ড করেছিল ইডি। কিন্তু সেই বয়ানে কেন্দ্রীয় সংস্থা সন্তুষ্ট নয় বলে জানা গিয়েছে। এরপর ২৭ জানুয়ারি ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে তলব করা হয়। ৩১ তারিখের মধ্যে ইডি অফিসে হাজিরা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। গত রবিবার দিল্লিতে এসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লির বাসভবনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে আঁচ করে, বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, বুধবার দুপুর ১টায় তাঁর রাঁচির বাসভবনে আধিকারিকদের সামনে তাঁর বিবৃতি রেকর্ড করতে রাজি হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ইডি-র রাঁচি অফিসে তিনি একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তদন্তে তিনি সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত। 
হেমন্ত সোরেনের দাবি, এই তদন্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতেই এই তদন্তের অবতারণা করা হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তার প্রস্তুতি এবং অন্যান্য পূর্ব নির্ধারিত ব্যস্ততার জন্যই তিনি ইডির জেরায় যোগ দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত এই জমি কেলেঙ্কারি মামলায় এখনও পর্যন্ত হেমন্ত সোরেনকে দশটি সমন পাঠিয়েছে ইডি। কিন্তু, তিনি একবারও তদন্তে যোগ দেননি।