মার্কশিট পড়ুয়াদের কাছে প্রেসার শিট, পরিবারের কাছে প্রেস্টিজ শিট: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। (Photo: Twitter/@BJP4India)

একটা পরীক্ষা, মার্কশিট, তার নম্বর, পাস-ফেল— এই দিয়েই কি একজন ছাত্রের মূল্যায়ন কখনও সম্ভব? একজন ছাত্রের মানসিক বিকাশে একটা মার্কশিট কি শেষ কথা বলবে? শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও, এ প্রশ্ন তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি নিজেই। সেই সঙ্গে তিনি বললেন, ‘একটি ছাত্রের কাছে আসলে মার্কশিটটা তার প্রেসার শিট হয়ে ওঠে। আর তার পরিবারের কাছে হয়ে ওঠে প্রেস্টিজ শিট।

শুক্রবার সকালে ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি নিয়ে বলতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নম্বর-সিস্টেমের কথা। এই নম্বর পাওয়ার দৌড়ে কি ধরনের বােঝা চেপে বসে পড়ুয়া তার পরিবারের ওপর, কি করেই বা একটা মার্কশিট একজন ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনে শেষ কথা হয়ে ওঠে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এমনই মন্তব্য করেন।

এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নতুন শিক্ষানীতির আয়নায় নতুন ভারতের ছবি প্রতিফলিত হবে। শুধু কঠিন জিনিস মুখস্থ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। স্কুলব্যাগ আর নম্বরের বােঝা পেরিয়ে আসল শিক্ষায় সমৃদ্ধ হতে হবে। কারণ একুশ শতক শিক্ষার, জ্ঞানের, অভিনবত্বের।


নতুন শিক্ষানীতি সম্বন্ধে এদিন সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘স্কুল শিক্ষায় অনেকগুলি পরিবর্তন আনতে হবে। কাঠামােগত পদ্ধতির বদল তাে আনতেই হবে, সেই সঙ্গে কারিকুলারর্স স্কিলেও পরিবর্তন আনতে হবে। বিজ্ঞানসম্মত ও গাণিতিকভাবে পড়াশােনা হওয়া উচিত। শিক্ষকদের মান বাড়াতে হবে। শুধু নির্দিষ্ট পরিমাণ পড়ে যে কোনও বিষয়কে পরীক্ষায় লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, সেটাকে আরও ছড়িয়ে দিতে হবে। ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে হাতে-কলমে ভােকেশনাল ট্রেনিং দেওয়া হবে।

এখানেই থেমে থাকেননি প্রধানমন্ত্রী। নতুন শিক্ষানীতি সম্বন্ধে হদিস দিতে গিয়ে তিনি আরও জানান, গত কয়েক দশকে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। শিক্ষানীতিরও বদল ঘটানাে প্রয়ােজন। এটা সবে শুরু। একটা নীতি আনা হয়েছে। এবারে এর যথােপযুক্ত প্রয়ােগ ঘটাতে হবে। সারা দেশের শিক্ষকদের মধ্যে মােট ১৫ লক্ষ শিক্ষকের মতামত নিয়ে এই নীতি আনা হয়েছে।

শুধু শ্রেণিকক্ষের মধ্যে পড়াশােনা সীমাবদ্ধ থাকবে না। পড়ুয়াদের জানতে হবে সারা বিশ্ব। নতুন শিক্ষানীতি সেই সুযােগ পড়ুয়াদের সামনে নিয়ে আসবে। বইয়ের শিক্ষাকে বাস্তবে প্রয়ােগ করতে হবে। শিখতে হবে হাতেকলমে। তবেই উৎসাহ বাড়বে। পড়ুয়াদের প্রশ্ন করার সুযােগ দিতে হবে। তাদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে অনুসন্ধিৎসা। তবেই বাড়বে শেখার আনন্দ। সেকারণে সিলেবাসের বােঝা কমানাে হচ্ছে।

পড়ুয়াদের ও সেই সঙ্গে অভিভাবকদের নতুন শিক্ষানীতি সম্বন্ধে সচেতন করতে মােদি বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় পড়াশােনা করতে পারবে পড়ুয়ারা। কোনও বিষয় ভালাে করে আত্মস্থ করতে মাতৃভাষার কোনও বিকল্প নেই। সেকারণেই এই সিদ্ধান্ত। বাঁধাধরা বিষয় নিয়ে পড়লে শিক্ষার আনন্দ কমে যায়। তাই বিষয় নির্বাচনেও অনেক বিকল্প থাকবে। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার আনন্দ লাভ করতে পারে।