বিহারে বিজেপির ‘১৬০+’ দাবি নিয়ে খাড়গের কটাক্ষ

ছবি: এনএনআই

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের উত্তাপ বাড়তে থাকায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ফের তীব্র আক্রমণ শানালেন বিজেপি ও এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে। রাজধানীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘বিজেপির ১৬০-এর বেশি আসন জয়ের পূর্বাভাস সম্পূর্ণ অবাস্তব। মানুষ আজ প্রকৃত উন্নয়ন চায়, ভয় দেখানোর পুরনো কৌশল নয়।’

খাড়গে অভিযোগ করেন, শাসক দল আবারও ‘জঙ্গলরাজ’ ইস্যুকে সামনে এনে ভোটে প্রভাব ফেলতে চাইছে। কিন্তু তাঁর মতে, ‘এই জঙ্গলরাজ তো বহু বছর আগের কথা। আজকের যন্ত্রণার নাম বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি আর পরিকাঠামোর অভাব। মানুষ এসবের উত্তর খুঁজছে, পুরনো প্রচারের নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাবল-ইঞ্জিন সরকার বলতে যা বোঝায়, কেন্দ্র–রাজ্যের যৌথ উন্নয়ন। কিন্তু সেটা কেবল কাগজে কলমেই আছে। বাস্তবে মানুষের জীবনের মান তলানিতে থেকেছে। কার্যত কৃষক থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী— কেউই উপকৃত হননি।’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে চাকরি নেই, দপ্তরগুলিতে স্বচ্ছতা নেই, সর্বোপরি সমস্যা নেই এমন কোনও ক্ষেত্র নেই।


প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের একনাগাড়ে আক্রমণ করে চলেছেন। তাঁরা এনডিএ’র আগের সরকারের রাজত্বকে জঙ্গলরাজ বলে কটাক্ষ করেছেন। মোদী দাবি করেছেন, মহাগঠবন্ধনকে ক্ষমতায় আনা মানে, বিহারে ‘জঙ্গলরাজ’কে ফিরিয়ে আনা। বিশেষ করে মোদী-অমিত শাহ সহ বিজেপি নেতাদের প্রচারের প্রধান নিশানায় লালুর নেতৃত্বাধীন আরজেডি সরকারের শাসনকালের একাধিক দুর্নীতি। সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে মহাগঠবন্ধন-এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ গেরুয়া শিবিরের নেতারা। এবার তারই পাল্টা দিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, খাড়গের এই মন্তব্য শুধু কেন্দ্রকে নয়, বিহারের বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণকেও সরাসরি আঘাত করছে। কারণ এনডিএ এই নির্বাচনে উন্নয়নকে প্রধান বার্তা হিসেবে তুলে ধরেছে। খাড়গের বক্তব্য, সেই প্রচারকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।

সভায় খাড়গে দাবি করেন, ‘দেশে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। যে দল ক্ষমতায় আছে, তাঁরা নিজের সুবিধামতো নিয়ম পাল্টায়, বিরোধীদের ভয় দেখায়, প্রশ্ন তুললে এজেন্সি লাগায়।’ তিনি বলেন, প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে মানুষের ভোটই একমাত্র উপায়।

বিহারের নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী শিবিরে খাড়গের এই তীব্র আক্রমণ নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘এটা স্পষ্ট যে, কংগ্রেস এখন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে রয়েছে, তাঁদের রাজনৈতিক প্রচার ভোটারের আবেগে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।’

ফলে সব মিলিয়ে খাড়গের এই বক্তব্য দিল্লি থেকে পাটনা— দুই জায়গাতেই রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এখন ভোটের আগে কোন বার্তা মানুষ কতটা গ্রহণ করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।