অমরনাথ দর্শনে মেঘভাঙা বৃষ্টির কবলে প্রয়াত বর্ষার দেহ ফিরে এল বারুইপুরে

পাহাড়ের দেশে বেড়াতে ভালোবাসতো বছর বাইশের বারুইপুরের চক্রবর্তী পাড়ার বর্ষা। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কবলে পড়ে প্রবল স্রোতে ভেসে বর্ষা প্রাণ হারালো অমরনাথ দর্শনে গিয়ে। সোমবার সকালে কফিন বন্দি নিথর বর্ষার দেহ ফিরল বারুইপুরের বাড়িতে।

আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশি শোকস্তব্ধ। সন্তান হারানোর হাহাকার বাড়ি জুড়ে। পয়লা জুলাই অমরনাথ যাত্রা মা মামা সহ সাতজন নিকটজনের সাথে। জুলাই এর তিন তারিখেও প্রতিবেশিদের সাথে কথা হয়েছে , কথা বলতে ভালোবাসা বর্ষার।

সাত জুলাই খবর আসে বারুইপুরে , বর্ষা প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। ষোলই জুলাই বর্ষার ঘরে ফেরার কথা ছিল। ফিরল প্রাণহীন শরীর এগারোই জুলাই। সূত্রের খবর , মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে প্রবল স্রোতে ভেসে যাবার সময়ে বর্ষা ও তাঁর মা মামার হাত ধরে পার হচ্ছিল।


হঠাৎই মায়ের হাত ছেড়ে যাচ্ছে দেখে বর্ষা মামার হাত ছেড়ে মাকে বাঁচাতে যায়। মামা বর্ষার মাকে ধরে ফেলে বাঁচাতে পারলেও ততক্ষণে ভেসে গেছে বর্ষা। জখম মা ও মামাকে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এলেও , অনেক পরে উদ্ধার হয় বর্ষার প্রাণহীন দেহ।

বর্ষার বাবা যাননি। বাড়িতেই ছিলেন। মেয়ে যে আর নেই , জানলেন মেয়ে বর্ষার কফিন বন্দি দেহ বারুইপুরে আসার পর। জানা গেল , এমএসসি পাশ করে বর্ষা পিএইচডি – র প্রস্তুতি নিচ্ছিল । সব আশা স্বপ্ন শেষ। বর্ষার পরিবারকে স্বান্তনা জানানোর ভাষা নেই প্রতিবেশিদের।

এরই মধ্যে বর্ষাকে বারুইপুরে শেষ বারের জন্য ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বারুইপুর পশ্চিম বিধানসভার বিধায়ক বিমান ব্যানার্জী। শোকের মধ্যেও কর্তব্য পালনে রত বারুইপুরের প্রশাসনিক মহল।

এদিকে , অবশেষে বাড়ি ফিরলেন অমরনাথ যাত্রাকে আটকে পড়া বালুরঘাটের সাত বন্ধু। রবিবার গভীর রাতে নিজ নিজ বাড়ি ফেরেন তারা। রাতের বেলা বাড়ি ফিরলেও সোমবার সকালেও তাদের চোখেমুখে সেই ভয়াবহতার ছাপ পরিষ্কার।

যখনই সেই প্রাকৃতিক রোষানলের কথা মনে পড়ছে তখনই শিউরে উঠছেন সকলেই। কোন ভাবেই সেই দৃশ্যের কথা ভুলতে পারছেন না। এদিকে গতকাল রাতেই ৭ জন বাড়ি ফেরায় স্বস্তিতে তাদের পরিবার পরিজনরা।

সকাল থেকে প্রতিবেশী এবং নিকটজনরা তাদের খোঁজখবর নিতে বাড়ি আসছেন আবার যোগাযোগ করছেন।

তারা বাড়ি ফিরে এসেছেন তবে যারা এখনো আটকে রয়েছেন বা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন তারা যাতে সকলে সুস্থ ও সুরক্ষিত ভাবে বাড়ি ফিরে আসতে পারেন এই কামনায় করেছেন তারা ।