এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাঁটতে হল দিল্লির বিজেপি সরকারকে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দিল্লিতে মমতা স্পর্শ। রাজধানীতে এবার লক্ষ্মীর ভান্ডারের অনুমোদন দিয়ে ভোট-প্রতিশ্রুতি রক্ষা করল রেখা গুপ্তের নেতৃত্বাধীন বিজেপি মন্ত্রিসভা। উল্লেখ্য, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে মহিলা সমৃদ্ধি যোজনায় মহিলাদের মাসে ২৫০০ টাকা অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। নির্বাচনে জয়ের পর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় বিলম্ব হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিরোধী দল আম আদমি পার্টি। শেষ পর্যন্ত নারী দিবসে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সমৃদ্ধি যোজনার কথা ঘোষণা করলেন।
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘নারী দিবসে আমাদের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেখানে দিল্লি নির্বাচনে আমরা মহিলাদের ২৫০০ টাকা তুলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ এই প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেটে ৫১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলেও জানিয়েছেন রেখা। খুব দ্রুতই উপভোক্তাদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাদের তাদের ইস্তাহারে বিজেপি জানিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে মাসে ২৫০০ টাকা অনুদান দেওয়া হবে মহিলাদের। আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালও জানিয়েছিলেন, নির্বাচনে জিতলে দিল্লির মহিলাদের দেওয়া হবে ২১০০ টাকা। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে দিল্লিবাসী বিজেপির সঙ্কল্পেই বেশি আস্থা রেখেছে। এমনকি মহিলা ভোটের সিংহভাগই গিয়েছে পদ্মশিবিরের ঝুলিতে। বিজেপি যদিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৮ মার্চের মধ্যে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে। কিন্তু সেই প্রকল্প কেন অনুমোদন পাচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিল্লির বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা।
এক্ষেত্রে অবশ্যই উল্লেখ করা যায়, মহিলাদের মাসিক অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্যত পথ দেখিয়েছিল বাংলার তৃণমূল সরকার। বাংলার লক্ষ্মীর ভান্ডারের পথ অনুসরণ করেই পরবর্তী সময়ে একাধিক বিজেপি এবং অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই ধরনের প্রকল্প শুরু হয়েছে। তার সর্বশেষ সংযোজন রেখা শর্মার দিল্লি।
শুধুমাত্র দিল্লিতেই নয়, পাঁচবার মধ্য প্রদেশে সরকার গঠনের পিছনে রয়েছে ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্প। ছত্তিশগড়ে বিজেপি এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাতৃবন্দন যোজনা’, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করেছিলেন। ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আদলে শুরু করেছেন ‘মাইয়া সম্মান’ যোজনা। এক্ষেত্রে বলতেই হয়, বাংলায় যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প শুরু করেছিলেন মহিলাদের জন্য, তখন সমালোচনা করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পথ অনুসরণ করা ছাড়া কোনও গতি নেই গেরুয়া শিবিরের।