ওড়িশায় হকি খেলোয়াড়কে গণধর্ষণের অভিযোগ, আটক ৪

ওড়িশার জাজপুর জেলায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় অভিযোগের তির কিশোরীর হকি কোচ ও তাঁর দুই সহযোগীর দিকে। গত ৩ জুন ঘটনাটি ঘটে ওড়িশার জাজপুর জেলায়। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরই ঘটনাটি সামনে আসে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কোচ সহ মোট চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। জাজপুরের পুলিশ সুপার যশপ্রতাপ শারিমল বলেন, ‘নির্যাতিতার অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। চার জনকে আটকও করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ জুন স্থানীয় একটি স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ১৫ বছরের ওই কিশোরী। সেই সময় তাকে অপহরণ করা হয়। সেখান থেকে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে চারজন মিলে ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের প্রত্যেকেরই বয়স ৩০-এর কোঠায়। ওই উঠতি হকি খেলোয়াড় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তার প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি পরিবারের কাউকে ঘটনার কথা না জানানোর জন্যও বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ।

সম্প্রতি ওই নির্যাতিতা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। গত রবিবার নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭০(২) ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ সহ অন্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে। শীঘ্রই তার ‘মেডিক্যাল টেস্ট’ করানো হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যে জেলার পকসো আদালতে মহিলা বিচারকে উপস্থিতিতে কিশোরীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।


এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জেলাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। শিশু সুরক্ষা সংগঠন ও ক্রীড়া মহল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। তারা খেলোয়াড়দের জন্য নিরাপদ প্রশিক্ষণ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি তুলেছে। বিশেষ করে নাবালিকাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলি। হকি স্টেডিয়াম ও অনুরূপ ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি এবং শিশু সুরক্ষা প্রোটোকল আরও কঠোর করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

দিন কয়েক আগে ওড়িশায় ভুবনেশ্বরে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার আগে ওড়িশায় একটি কলেজে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে গায়ে আগুন দেন এক ছাত্রী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। সেই ঘটনায় উত্তাল হয় ওড়িশা। এরই মধ্যে পুরীতে এক নাবালিকাকে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা সামনে এল।