হাসপাতালের জুনিয়র মহিলা চিকিৎসকের উপর নিগ্রহ। অভিযোগ উঠেছে এক ট্র্যাফিক হোমগার্ডের বিরুদ্ধে।দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে মারধর করা হয় ওই মহিলা চিকিৎসককে। এমনকি ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যাবেলা ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এরপরে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই মহিলা চিকিৎসক। পুলিশ অভিযুক্ত ওই হোমগার্ড সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মঙ্গলবার অভিযুক্ত ২ জনকে আদালতে পেশ করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়েছিলেন হাওড়ার উলুবেড়িয়া ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত শেখ বাবুলাল। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে শেখ বাবুলাল তাঁর আত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য আসেন। সেইসময় হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কর্মরত ছিলেন নির্যাতিত ওই মহিলা চিকিৎসক। এরপর রোগীকে চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ওই মহিলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীকে দেখে ও পরীক্ষা করে ওই চিকিৎসক হাসপাতালের রেস্ট রুমে চলে যান। এরপরেই ঘটে ঘটনাটি। রোগীর চিকিৎসা না করার অভিযোগে চিৎকার করতে শুরু করেন বাবুলাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এরপরেই ওই রেস্ট রুমে এসে মহিলা চিকিৎসকের উপর চড়াও হন বাবুলাল ও তাঁর দলবল। অভিযোগ, রোগীকে ঠিকমতো গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করা হয়নি। এরপরেই বাবুলাল ও তাঁর আত্মীয়রা ওই জুনিয়র মহিলা চিকিৎসকের উপর মারধর শুরু করেন। মহিলা চিকিৎসককে একাধিকবার চড় মারা হয়। অভিযোগ তাঁর হাতও মুচকে দেওয়া হয়। এমনকি তাঁর দলবলের লোকেরা ধর্ষণের হুমকিও দেয় ওই মহিলা চিকিৎসককে। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ মহিলা চিকিৎসকের। ক্রমশ অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠলে হাসপাতালের ওয়ার্ডে থাকা নার্স, ওয়ার্ড বয় -রা মিলে ওই চিকিৎসককে হামলার হাত থেকে বাঁচান।
এরপরে আক্রান্ত মহিলা চিকিৎসক সোমবার রাতেই উলুবেড়িয়া থানায় গিয়ে ঘটনাটির নিগ্রহের অভিযোগ ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই হোমগার্ড সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম।
সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফের হাওড়ায় এক মহিলা জুনিয়র চিকিৎসক নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। রাজ্য সরকারের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলা হয়েছে, আর কতদিন নীরব দর্শক হয়ে থাকবে রাজ্য? সরকারি হাসপাতালের কোনও নিরাপত্তা নেই। রাজ্য সরকার ও পুলিশকে ব্যর্থ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। ডাক্তারদের সঙ্গে প্রশাসনের তরফে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের পক্ষ থেকে।