অর্থ নয়, বিচারকদের উচিত ন্যায়বিচারকে ভালোবাসা: গাবাই

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের (সিএটি) সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাবাই বলেছেন যে অর্থ নয় বিচারকদের ভালোবাসা থাকতে হবে ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার প্রতি।

গাবাই বলেছেন যে কিছু বিচারপতির আচরণ এবং ব্যবহারের জন্য মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ। তিনি বলেন, ‘আমি সংবাদপত্র এবং ইন্টারনেটের কিছু প্রতিবেদনে পড়েছিলাম, একটি হাইকোর্টে একজন বিচারক তিরস্কার করার পর একজন তরুণ আইনজীবী আদালতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বিচারক এবং আইনজীবীরা হলেন ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে সোনার পাখির দু’টি ডানার মতো। ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে উভয়েই অপরিহার্য। বিচারক এবং আইনজীবীরা মিলেমিশে কাজ না করলে, আদালতও ঠিক করে কাজ করতে পারবে না।‘ এরপরেই তিনি বলেন, ‘বিচারপতি এবং বিচার বিভাগের সঙ্গে জড়িত মানুষদের অর্থের প্রতি আসক্তি থাকা ঠিক নয়। তাঁদের ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতাকেই আগে ভালোবাসা উচিত।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ভারতের নাগরিকরা আমাদের কাছে আসেন কারণ তাঁদের বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রয়েছে। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে তাঁরা ন্যায়বিচার পাবেন। আমাদের বিচার কখনই দায়িত্বপরায়নতা ও ন্যায়পরায়নতা ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত নয়। এই দায়িত্বশীলতা শুধুমাত্র কর্মক্ষেত্রেই নয় আমাদের প্রাত্যহিক জীবনেও বজায় রাখা উচিত।’


তিনি আরও বলেন যে, ‘গত চার দশক ধরে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (সিএটি) ন্যায়বিচারকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে। ভারতের আইন কমিশন তাদের ২৭২ তম রিপোর্টে জানিয়েছে যে, তারা মামলা নিষ্পত্তির হার ৯৪ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই হার ছিল ৯১ শতাংশ। সিএটি’এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী ইতিমধ্যে ছয় লাখের মধ্যে প্রায় চার লাখ মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এই তথ্য থেকে সিএটি’র কর্মশৃঙ্খলা, কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং দায়িত্বপরায়ণতার প্রমাণ পাওয়া যায়।’

উল্লেখ্য, ২০২৫ এর ১৪ মার্চ তৎকালীন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি ভার্মার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ও বিপুল পরিমাণ পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল সারা দেশে। অভিযোগ উঠেছিল পুড়ে যাওয়া টাকার বান্ডিল ছিল অনৈতিক উপায়ে অর্জিত। এই মামলার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না একটি আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন। এই কমিটি বিচারপতির বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। শুধুমাত্র তাঁকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাহাবাদ হাই কোর্টে। এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি গাবাইয়ের মন্তব্য ভীষণোভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।