এক সাংবাদিকের বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে জম্মুতে। প্রশাসনের দাবি, সরকারি জমি দখল করে তৈরি হয়েছিল বাড়িটি। কিন্তু এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে নস্যাৎ করে সাংবাদিক আরফাজ আহমেদ দাইংয়ের অভিযোগ, সত্য তুলে ধরার ‘অপরাধে’ তাঁকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘যে অন্যায় আমি প্রকাশ্যে এনেছি, তার প্রতিশোধ হিসেবেই আমার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম নিস সেহের ইন্ডিয়ার সাংবাদিক দাইং জানান, বাড়ি ভাঙার সময় তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয় এবং পরে তাঁকে ও তাঁর দুই ভাইকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন, কেন শুধুমাত্র দাইংয়ের বাড়িই ভাঙা হল? স্থানীয়দের বক্তব্য, সরকারি জমি দখলের অভিযোগ বহু উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থাকলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দাইংয়ের দাবি, জম্মু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা ৭০০ থেকে ৮০০ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়ি ভাঙতে হাজির হন। সঙ্গে ছিল চারটি বুলডোজার। তাঁর কথায়, ‘এত বাহিনী এনে একটি বাড়ি ভাঙা— এর মধ্যেই উদ্দেশ্য স্পষ্ট।’
ঘটনার একাধিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিপুল সংখ্যক পুলিশ দাঁড়িয়ে বুলডোজারের কাজ তদারকি করছেন এবং দাইংকে ঘটনাটি সরাসরি সম্প্রচার করা থেকে আটকানোর চেষ্টা করছেন। দাইং জানিয়েছেন, ‘আমাকে ফোন করতেও দেওয়া হয়নি। আমাকে আঘাত করা হয়েছে। আমি বলেছিলাম, যদি ভাঙতেই হয়, ভাঙো– কিন্তু একজন সাংবাদিক হিসেবে তথ্য জানানোর অধিকারটুকু আমাকে দাও।’
প্রশাসনের দাবি, সরকারি জমি দখল করে বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। তবে দাইংয়ের বক্তব্য, প্রায় চার দশক ধরে তাঁর পরিবার এই বাড়িতেই বসবাস করছে। এই ঘটনায় চাপে পড়েছে জম্মু উন্নয়ন পর্ষদ। এই ঘটনার পর লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং বিজেপি নেতা কাবিন্দর গুপ্তর এক্সেলসিয়ার কলোনির বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় আইনজীবী শেখ শাকিল। সরকারি জমি দখলের অভিযোগ থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
নিয়মের প্রয়োগ কি নিরপেক্ষভাবে হচ্ছে, নাকি ভিন্নমত পোষণকারীদেরই বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে? ঘটনার পর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে নতুন করে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।