রবিবার জনতা কারফিউ পালন করুন সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদি (Photo: IANS/BJP)

করোনাভাইরাস সমস্যার মোকাবিলা করতে সতর্কতামূলক ভাবে রবিবার ‘জনতা কার্ফিউ’ পালন করুন। সেদিন দেশের প্রত্যেক মানুষ ভোর সাত’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন বলে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আতঙ্কে আপনারা অত্যাবশ্যক পণ্য কিনে বাড়িতে মজুত করবেন না কারণ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন খাদ্যপণ্য, দুধ কিংবা ওষুদের যোগান যাতে সঠিক থাকে তা সুনিশ্চিত করা হবে। মোদি আরও বলেন, আগামী রবিবার ‘জনতা কার্ফিউ’ চলার সময় কেউ বাড়ি থেকে বেরোনে না কিংবা পাড়ায় কোথাও জমায়েত করনে না শুধুমাত্র অত্যাবশ্যক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যারা তারাই একমাত্র বাড়ি থেকে বেরুতে পারেন। অন্যরা বাড়িতেই থাকুন। 

প্রধানমন্ত্রী চান যাতে দেশের মানুষ সবাই যেন এই নিয়ম পালন করুন। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন একদিনের এই অনুশীলন আমাদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা পালনের উৎসাহ যোগাবে যার সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে ভবিষ্যতে বিশেষ করে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে দুরত্ব বজায় রাখতে। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ খুব প্রয়োজন না হলে কেউ বাইরে বেরোবেন না। রবিবারের ‘জনতা কার্ফিউ’ সেই লক্ষ্যে আপনাকে আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রেরণা জোগাবে। আমি আপনার কাছ থেকে কয়েকটি সপ্তাহচেয়ে নিচ্ছি যাতে করোনার মতো ভয়ঙ্কর রোগের বিস্তার ভারত রোধ করা সম্ভব হয়। করোনাভাইরাস মানবজাতিকে ধ্বংসের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই অতিমারী রোগে বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও বেশি দেশ আজ প্রভাবিত। এর কোনও ওষুধ নেই, সতর্কতাই আমাদের সুস্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করতে পারে। আমাদের প্রয়োজন ভিড় এড়িয়ে চলা এবং বেশি করে বাড়িতে সময় কাটানো।

আপনি যদি রাস্তায় ঘুরে বেড়ান এবং ভাবেন যে আপনার মধ্যে এই রোগ সংক্রামিত হবে না তাহলে ভুল করবেন। আপনি নিজেকে এবং আপনার পরিবারের লোকেদের বিপদে ফেলবেন না বলে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রসঙ্গত, ভারতে বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৩। এদিন ১৮’টি নতুন রুগির সন্ধান পাওয়া গেছে। এই রোগে ভারতে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। প্রধানমন্ত্রীর এদিনের ভাষণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি কটাক্ষ করে বলেন, আগ্রহ নিয়ে ছিলাম যে, করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কী দিশা দেখান। কিন্তু হতাশ হয়েছি প্রধানমন্ত্রী সুলভ ভাষণ শুনতে না পেয়ে। বরং তিনি কার্ফিউ শব্দ ব্যবহার করলেন। ঘন্টা বাজানোর কথা বললেন, এটা তো আর এস এস কর্মীরা করেন। ঘন্টা বাজিয়ে কি করোনা তাড়ানো যায়। উনি নবরাত্রির কথা বললেন। বললেন, নবরাত্রি আসছে। রমজানের কথা তো বললেন না। বলতে পারতেন, সব ধর্মের মানুষ একজোট হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা। কিন্তু বললেন না। এখনও রাজ্যকে কোনও সাহায্য করেনি কেন্দ্র। উল্টে টাক্স ফোর্স কিভাবে কাজ করবে তার দায় অর্থমন্ত্রীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন। ভাষণে রইলো হিন্দুত্ববাদের কথা। যে রাজনীতি ওরা করেন। 

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে লেখেন, সংসদ চলছে। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার জন্য গণতন্ত্রের পবিত্র মন্দির কি পবিত্র মনে হল না। তার বদলে আগে রেকর্ড করা ভিডিও মেসেজ দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীরা টিভিতে দেখলেন। ঘটনা পরম্পরা কি? যা ঘোষণা আজ করে দিলেন, এরপর তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে কি বলবেন। এটা কি কোঅপারেটিভ ফেডারেলিজম? প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে গিমিক বেশি, সমাধান কম।