বিহারের কুর্সিতে কি তেজস্বী বসতে চলেছেন? জনমত সমীক্ষায় এক নম্বরে তেজস্বী, তৃতীয় স্থানে নীতীশ

হাতে গোনা আর মাত্র কটা দিন বাকি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে।  এসআইআর এলং ভোট নিয়ে সবার নজর এখন বিহারের দিকে। বিহারের মসনদে কি আবার নীতীশ কুমার ফিরবে, এই জল্পনা রাজনৈতিক মহল ঘোরাফেরা করছে। নাকি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ পাবে বিহার, তা নিয়ে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে।

বিহারের ভোট নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে সি-ভোটার। সমীক্ষার শীর্ষে নাম রয়েছে লালুপুত্র আরজেডি নেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের নাম। দ্বিতীয় হিসেবে নাম উঠে এসেছে প্রশান্ত কিশোরের। তিন নম্বরে রয়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ কুমারের নাম। অর্থাৎ সমীক্ষার দাবি অনুযায়ী, অনেকটাই পিছনে পড়ে গেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।

সমীক্ষা দেখা যাচ্ছে, ৩৬.২  শতাংশ মানুষ চাইছেন তেজস্বীকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ২৩.২ শতাংশ ভোটদাতার সমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা সদ্যগঠিত ‘জন সুরাজ পার্টি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রধান প্রশান্ত কিশোর। অথচ ন’বারের মুখ্যমন্ত্রী জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার মাত্র ১৫.৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়ে তিন নম্বরে রয়েছেন।


অবশ্য তালিকায় আরও দু’জনের নাম উঠে এসেছে। সি-ভোটার জনমত সমীক্ষায় ‘পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী’ হিসেবে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন বিজেপির আর এক সহযোগী দল লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ান। প্রয়াত দলিত নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্রকে পাটনার কুর্সিতে দেখতে চেয়েছেন ৮.৮ শতাংশ ভোটদাতা। অন্যজন বিজেপি নেতা ও বর্তমানে বিহারের অর্থমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী।  তাঁকে পছন্দ করছেন ৭.৮ শতাংশ মানুষ।

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে আইএএনএস-ম্যাট্রিজ একটি সমীক্ষা  প্রকাশ করে। সেই জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী,  বিহারে ‘পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী’ হিসাবে পছন্দের দৌড়ে নীতীশ সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তাঁর পক্ষে ছিলেন প্রায় ৪২ শতাংশেরও বেশি ভোটদাতা! ২৩ শতাংশের সমর্থন পেয়ে ওই সমীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তেজস্বী। ৮ শতাংশের সমর্থন নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন পিকে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে বিহারে এনডিএ শিবিরে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল বিজেপি ৭৪টি। জেডিইউ পেয়েছিল ৪৩টি। অর্থাৎ জেডিইউয়ের চেয়ে অনেকটাই বেশি আসন পায় পদ্ম শিবির। তা সত্ত্বেও জোটের স্বার্থে নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। এবারও এনডিএর মুখ সেই নীতীশই। নীতীশ কুমারের জনপ্রিয়তা যে অনেকটা কমে গিয়েছে, তা যেন নতুন করে তুলে ধরল সমীক্ষার ফলাফল। এরপরও বিজেপি তাঁকেই সামনে রেখে এনডিএ-র প্রচার চালায় কিনা সেটা দেখার।

গত ৬ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন দু’দফায় ভোটগ্রহণের কথা জানায়।  বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনে প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৬ নভেম্বর। ওই দফায় ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ১০-১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমার পর তা পরীক্ষা হবে ১৮ অক্টোবর। প্রথম দফার ভোটের প্রার্থীরা নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ১৩ অক্টোবরে গেজেটে তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে বলে খবর। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা চাইলে নাম তুলে নিতে পারবেন। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।