উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার বাসিন্দা কবিতা চন্দ অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ভিনসন জয় করে দেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে নতুন কৃতিত্বের সংযোজন করলেন। স্থানীয় সময় ১২ ডিসেম্বর রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ৪,৮৯২ মিটার উঁচু এই দুর্গম শৃঙ্গের চূড়ায় পৌঁছন তিনি। এই সাফল্য ‘সেভেন সামিটস’ অর্থাৎ বিশ্বের সাতটি মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গগুলিতে আরোহণের লক্ষ্যে কবিতার অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
উত্তরাখণ্ডের মেয়ে হলেও বর্তমানে মুম্বইয়ে বসবাস করেন ৪০ বছর বয়সি কবিতা এর আগেও তিনি ইওরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস জয় করেছিলেন। তবে অ্যান্টার্কটিকার মতো প্রতিকূল পরিবেশে মাউন্ট ভিনসন জয় করার পরে উত্তরাখণ্ড থেকে শুরু করে গোটা দেশই কবিতার প্রশংসায় মুখর। মাউন্ট ভিনসন আরোহণের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম কঠিন পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত।
প্রচণ্ড ঠান্ডা, প্রবল হাওয়া, বিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক অবস্থান এবং অ্যান্টার্কটিকার শুষ্ক আবহাওয়া, এই সবকিছু মিলিয়ে প্রতিটি মুহূর্তই পর্বতারোহীদের জন্য এক একটি বড় পরীক্ষা। তবু সব প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে ধৈর্য ও মানসিক শক্তির পরিচয় দিয়েছেন কবিতা। তাঁর অভিযান শুরু হয় ৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে। ৪ ডিসেম্বর তিনি চিলির পুনটা আরেনাসে পৌঁছন এবং ৭ ডিসেম্বর ইউনিয়ন গ্লেসিয়ারে যান। সেখান থেকে বিশেষ বিমানে ২,১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ভিনসন বেস ক্যাম্পে পৌঁছে শুরু করেন মূল অভিযান।
কবিতা শুধু পর্বতারোহীই নন, তিনি একজন সফল ক্রীড়াবিদও। দিল্লি ও মুম্বই হাইরক্স ২০২৫ ইভেন্টে তিনি বিজয়ী হয়েছেন এবং অ্যাবট ওয়ার্ল্ড ম্যারাথন মেজরস সিক্স স্টার চ্যালেঞ্জের তিনটি রেসেও তিনি অংশ নিয়েছেন। কবিতা একসময় সাংবাদিক ছিলেন কিন্তু ২০২৪ সাল থেকে তিনি ফিটনেসকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চাকরি ছেড়েছিলেন। তাঁর মতে, সেই সিদ্ধান্তই তাঁর জীবনের দিশা বদলে দেয়।
এই অভিযানে কবিতার নেতৃত্বে ছিলেন খ্যাতনামা হাই-অল্টিটিউড গাইড মিংমা ডেভিড শেরপা। পর্বতারোহী ভরত থামিনেনি ও তাঁর সংস্থা ‘বুটস অ্যান্ড ক্র্যাম্পন’এর সহায়তায় মোট ন’জন ভারতীয় পর্বতারোহীর দল সফলভাবে মাউন্ট ভিনসনের শীর্ষে পৌঁছয়। কবিতার এই সাফল্য নিঃসন্দেহে দেশের নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস।