লাদাখে ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি, পরে মিটমাট

ভারত ও চীনের সামরিক কর্মী (Photo: IANS)

পুর্ব লাদাখে সারা দিন ধরে চলমান ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে পারস্পরিক উত্তেজনার সমাধান করা হয়েছে, জানিয়েছে সেনাবাহিনীর সুত্র। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার সকালে যখন পানগং হ্রদের উত্তরের তীরে ভারতীয় সেনারা টইল দিচ্ছিল, সেই সময় চিনা সেনারা তাদের পথ আটকায়।

তিব্বত থেকে লাদাখ পর্যন্ত বিরাট জায়গা জুড়ে থাকা ওই হ্রদটির দুই-তৃতীয়াংশ চিনের অধীনস্থ। এরপরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী ও চিনা সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। দুই দেশের জওয়ানরাই একে অপরকে শক্তি প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানায়। ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বুধবার সন্ধে পর্যন্ত বজায় থাকে।

সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘বুধবার প্রতিনিধি পর্যায়ের আলােচনার পরে বিষয়টি পুরােপুরি থামিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অশান্তি দূর করা হয়েছে। এই ধরনের বিষয় এলসি (বাস্তব নিয়ন্ত্রণের লাইন) সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন ধারণার কারণেই ঘটে থাকে। এ জাতীয় ঘটনাগুলি সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থাও রয়েছে’।


লাদাখের পানগং হ্রদের আশেপাশে ভারতীয় সেনা এবং চিনা সেনাদের মধ্যে হওয়া অশান্তির ঘটনা এই প্রথম নয়, অথচ এটি এমন একটি জায়গা যা প্রচুর পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ২০১৭ সালের আগস্টেও, দু’পক্ষের সেনাদের মধ্যে পারস্পরিক অশান্তির একটি ভিডিও সােশ্যাল সাইটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছিল। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল যে, দুই দেশের কয়েকজন সেনা একে অপরকে ঘুষি মারছে এবং লাথি মারছে। এমনকি একে অপরকে পাথর ছুড়ছে। এই দৃশ্যও দেখা যায় ভিডিওতে।

এমনকি গত স্বাধীনতা দিবসেও চিনের সেনাবাহিনী পানগং হ্রদের তীরে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযােগ ওঠে, কিন্তু ভারতীয় সেনারা তাদের ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ বাধা দেয়। সেই সময় দু’ঘন্টা চেষ্টার পরে ভারত-চিন সীমান্ত অঞ্চলে তৈরি হওয়া এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে দুই দেশের সেনাই তাদের নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার আগে বিতর্কিত অঞ্চলটিতে নিজেদের দেশের অধিকার ঘােষণা করে ব্যানার আটকায়।

এরপরে, ঠিক বুধবারের মতােই ব্রিগেডিয়ার স্তরের আধিকারিকরা ওই অঞ্চলের উত্তেজনা হ্রাস করার উপায় বের করতে একটি বৈঠক করেন এবং সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান করেন।

পানগং হ্রদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল রক্ষার জন্য, ভারতীয় সেনাবাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা উচ্চগতির ইন্টারসেপ্টর নৌকাগুলি সবসময় প্রস্তুত রাখে সেখানে, ওই রণতরীতে প্রায় ১৫ জন সেনা একসঙ্গে থাকতে পারে এবং রাডার, ইনফ্রারেড সেন্সর এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম। সহ সমস্ত আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে সেটিতে। এই রণতরী নিজেদের জায়গা পুনরুদ্ধার এবং আধিপত্য ঘােষণা করতে টইল পরিচালনার কাজেও ব্যবহৃত হয়।