পুতিনের ভারত সফরে আমেরিকার অস্বস্তি? ‘ভারত নিজের পথেই চলবে’, বার্তা জয়শংকরের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারত যে বিশ্বের যে কোনও দেশের সঙ্গে নিজের মতো করে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে, তা স্পষ্ট করে জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি বলেন, ভারতের কৌশলগত স্বাধীনতা আছে—কোনও দেশ, এমনকি আমেরিকাও, ভারতের বিদেশনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের পরই জয়শংকর এই মন্তব্য করেন। তাঁর বক্তব্য, দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে কোনও দেশের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলবে, তা ভারত নিজেই ঠিক করবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দু’দিনের সফরে ভারতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয় দু’জনের। প্রশ্ন উঠেছে, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কি ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে সমস্যা তৈরি করবে? বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর স্পষ্ট করে বলেন, ভারতের নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা আছে।

কোন দেশের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক রাখবে, তা ভারতই ঠিক করবে। তিনি জানান, যত বেশি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে, তত আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান আরও শক্ত হবে। বিদেশমন্ত্রীর মতে, ‘রাশিয়ার সঙ্গে চিন বা ইউরোপের দেশগুলির সম্পর্কে কখনও উন্নতি হয়েছে, আবার কখনও অবনতি হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক কখনও খারাপ হয়নি। রাশিয়া নিয়ে ভারতবাসীর মনে একটা আবেগ আছে।’

ইউক্রেন যুদ্ধের সময় রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কেনায় আমেরিকা বরাবরই আপত্তি জানিয়ে এসেছে। এই কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন, ফলে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়েছে। এই আবহে ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে আমেরিকা ভালোভাবে নেবে না বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা।

যদিও এস জয়শংকর জানিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় কোনও বাধা পড়েনি। দিল্লি নিয়মিতই ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। বিদেশমন্ত্রীর ইঙ্গিত, পরিস্থিতি যতই জটিল হোক, খুব শীঘ্রই ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি হতে পারে। তাঁর কথায়, ‘আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কে বাণিজ্যই আসল বিষয়। আমেরিকারও তা-ই ভাবে। দু’দেশেরই যাতে ভালো হয়, সেই চেষ্টা চলছে।’ কিন্তু এ সবের পাশাপাশি ভারত নিজের স্বার্থ বজায় রেখে চলবে বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয়শঙ্কর।