ট্রাম্পের প্রস্তাব মতো গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্যালেস্তাইনের মানুষ ধীরে ধীরে দেশে ফিরছেন। কথা মতো হামাস বন্দি ইজরায়েলি ও অন্যান্য বিদেশিদের ফেরত দিয়েছে। গাজায় এখন প্রধান কাজ ত্রাণ সরবরাহ এবং পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা। শহরের ৮০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেগুলিকে বসবাসযোগ্য করে তোলা এবং অফিস-কাছারি চালু করতে অবকাঠামোর দ্রুত উন্নতি জরুরি।
সোমবার মিশরের শর্ম-আল-শেখ শহরে ‘গাজা শান্তি সম্মেলন’ আয়োজিত হয়। সেখানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন কীর্তিবর্ধন সিং। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে প্যালেস্তাইন পুনর্গঠন কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে সাউথব্লক সূত্রে জানানো হয়েছে। সেই কমিটি ভারতের তরফে গাজায় ত্রাণ ও পুনর্গঠন এর কাজ পর্যালোচনা করবে বলে খবর।
মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, দিল্লি সব সময় চায় কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়ায় সমস্যা সমাধানের। গাজায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তিপরিকল্পনাকে সমর্থন করে ভারত। শুধু তা-ই নয়, গাজা শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে মিশর এবং কাতারের ভূমিকারও প্রশংসা করা হয়। ভারত ওই অঞ্চলের শান্তি বজায় রাখার সব প্রচেষ্টাকেই সমর্থন করে বলেও জানানো হয়েছে।
সেই লক্ষ্যে গাজায় পুনর্গঠন করতে সাহায্য করবে ভারত। মানবিক সাহায্য হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খাদ্য সামগ্রী ছাড়াও ওষুধ, জামাকাপড় এবং মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন বেশি করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। শুধু মানবিক সাহায্য নয়, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজাকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তাও করছে সাউথব্লক।
প্রথমে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার কাজে সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি, ইজরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া গাজার জল এবং নিকাশি ব্যবস্থাও নতুন করে তৈরিতে সাহায্য করবে ভারত। আমেরিকার অনুমান, গাজাকে পুনর্নির্মাণ করতে খরচ হবে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক কর্তা জ্যাকো সিলিয়ার্সের দাবি, দু’বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় কমপক্ষে পাঁচ কোটি ৫০ লক্ষ টন ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপ সরানোও সময় এবং ব্যয়সাপেক্ষ। কয়েক দশক সময় লেগে যেতে পারে গাজাকে আবার পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।
তবে ভারতের এই ভূমিকা নতুন নয়। আফগানিস্তান পুনর্গঠনে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বস্তুত সেই কারণেই তালিবান নেতৃত্ব দ্বিতীয় বার ক্ষমতা দখলের পর ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী। কাবুলের সরকারি টেলিভিশন স্টেশন ভারতের দূরদর্শন কর্তৃপক্ষের তৈরি করা। এছাড়া সে দেশে অসংখ্য রাস্তা সেতু এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল তৈরি করে দিয়েছিল ভারত।
মনে করা হচ্ছে প্যালেস্তাইনের ব্যাপারেও একই পথে এগোবে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিরোধীরা প্যালেস্তাইন নিয়ে বারবার নিশানা করেছে মোদী সরকারকে। প্যালেস্তাইনের সঙ্গে ভারতের যে দীর্ঘ সম্পর্ক তার প্রতিফলন মোদী সরকারের কাজকর্মে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলা হয়। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্যালেস্তাইন ইস্যুতে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মোদী সরকারের ভূমিকার নিন্দা করে সরব হয়েছিল কংগ্রেস, বাম, সমাজবাদী পার্টি এবং ডিএমকে।