সুদর্শন চক্র বা এস-৪০০ কিনছে ভারত, রাশিয়ার সঙ্গে ১০ হাজার কোটি টাকার চুক্তির সম্ভাবনা

অপারেশন সিঁদুরে সাফল্যের পর সুদর্শন চক্র বা এস-৪০০ কিনছে ভারত। রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করতে চলেছে সাউথ ব্লক। এস-৪০০ বা সুদর্শনের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র সংখ্যা আরও বাড়াতেই এই পদক্ষেপ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করাই মূল উদ্দেশ্য।

অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় বায়ুসেনার এস-৪০০ মিসাইলের দাপট কারও অজানা নয়। ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে পাকিস্তানের পাঁচ থেকে ছয়টি যুদ্ধবিমান এবং একটি গুপ্তচরবিমান নামাতে সক্ষম হয়েছিল রুশ প্রযুক্তির এই ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতীয় বায়ুসেনা এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে অভিহিত করেছিল। তারপর থেকেই এর চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। সূত্রের খবর,  প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জলদিই প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিলের (DAC) কাছে এই বিষয়ে অনুমোদনের জন্য ক্রয় প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে।

বায়ুসেনার এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘বিপুল পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র কেনার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে।‘  এই প্রস্তাবটি আগামী ২৩ অক্টোবর প্রতিরক্ষা ক্রয় পরিষদ বা ডিফেন্স অ্যাকিউজিশন  কাউন্সিলের বৈঠকে তোলা হবে। অনুমোদন মিললে দ্রুতই আনুষ্ঠানিক চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


উল্লেখ্য ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৫.৫ বিলিয়ন ডলারে ৫টি এস-৪০০ কেনার কথা ছিল ভারতের। এর মধ্যে তিনটি ইতিমধ্যেই ভারতে এসে অপারেশনাল পর্যায়ে রয়েছে।  এই চুক্তির শেষ দু’টি মিসাইল সিস্টেম ২০২৬-২০২৭ সাল নাগাদ সরবরাহ করা হবে বলে খবর।

তবে দুই দেশের মধ্যে সম্প্রতি আলোচনায় অতিরিক্ত এস-৪০০ ও এস-৫০০ ইউনিট কেনা নিয়েও প্রস্তাব উঠেছে। এস-৪০০ ছাড়াও ভারত নতুন প্রজন্মের ‘বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ’ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল কেনার দিকেও নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি, ব্রহ্মোস সুপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল ও তার উন্নত সংস্করণগুলির সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় তৈরিএই ‘সুরক্ষাকবচ’। আধুনিক যুদ্ধে বিশ্বের প্রথম সারির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে মনে করা হয়। অন্তত ৬০০ কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে পারে ‘সুদর্শন চক্র’। ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা রয়েছে।

পাকিস্তান ও চিনকে নজরে রেখে ৩টি এস-৪০০ বা সুদর্শন চক্র রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং উত্তর-পূর্বে মোতায়েন রয়েছে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রেঞ্জ ৪০০ কিলোমিটার হওয়ায় ভারতের উত্তর, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।