রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাল ভারত। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের কূটনৈতিক প্রতিনিধি পেটাল গহলৌত শনিবার শরিফের মন্তব্যকে ‘অদ্ভুত নাটক’ বলে আখ্যা দিয়ে পাল্টা জবাব দেন। শুধু কাশ্মীর নয়, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান, পহেলগামে জঙ্গি হামলা এবং ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাসও তুলে ধরেন তিনি।
শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, ‘কাশ্মীরের জনগণের উপর ভারত অবিচার ও অত্যাচার চালাচ্ছে। একদিন এই অত্যাচারের অবসান হবেই। পাকিস্তান সব সময় কাশ্মীরবাসীর পাশে আছে।’ শুধু তাই নয়, তিনি সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়েও ভারতকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ওই চুক্তি স্থগিত করেছে।
এই বক্তব্যের জবাবে শনিবার ‘রাইট টু রিপ্লাই’ বা পাল্টা জবাবের অধিকার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের প্রতিনিধি পেটাল গহলৌত বলেন, ‘সকালে এই সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কিছু অদ্ভুত নাটক করেছেন। তিনি ফের সন্ত্রাসবাদকে মহান করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। অথচ এই সন্ত্রাসবাদই পাকিস্তানের বিদেশনীতির মূল উপাদান।’ গহলৌত আরও বলেন, ‘কোনও নাটক, কোনও মিথ্যাভাষণ সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবে না।’
পহেলগামে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এটাই সেই পাকিস্তান, যারা ওই ঘটনার পর রাষ্ট্রসঙ্ঘে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ নামের এক জঙ্গি সংগঠনকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল। টিআরএফ আসলে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী, যাদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ গোটা উপমহাদেশের জন্য ক্ষতিকারক।’
ভারতের পক্ষ থেকে আরও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্বের কুখ্যাত জঙ্গি ওসামা বিন লাদেনকেও আশ্রয় দিয়েছিল পাকিস্তান। এই সন্ত্রাসবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের ইতিহাস, যার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বকেই সতর্ক থাকতে হবে বলেই ভারতের কূটনীতিক মন্তব্য করেন।
এবারের রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার ৮০-তম সম্মেলন চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। বিশ্বের নানা দেশের রাষ্ট্রনেতারা এই সভায় অংশ নিচ্ছেন এবং নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছেন। যদিও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবারে উপস্থিত থাকতে পারেননি। ভারতের তরফে প্রতিনিধিত্ব করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি সাধারণ সভায় ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে ভাষণ দেবেন।