দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ‘সুদর্শন চক্র’-র সফল পরীক্ষা

ওড়িশা উপকূলে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ‘সুদর্শন চক্র’-র সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হল। বৃহস্পতিবার চালানো এই পরীক্ষার বিষয়ে রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি জানান, এই ‘ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স ওয়েপন্স সিস্টেম’ (আইএডিডব্লিউএস)-এর সফল পরীক্ষা ভারতের আকাশসীমাকে আরও সুরক্ষিত ও অপ্রবেশযোগ্য করে তুলবে।

ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর হাত ধরে গড়ে উঠেছে এই মাল্টি-লেয়ারড ডিফেন্স সিস্টেম, যার মূল শক্তি তিনটি আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা – কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল (কিউআরএসএএম), অ্যাডভান্সড ভেরি শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (ভিএসএইচওআরএডিএস), এবং ডাইরেক্ট এনার্জি ওয়েপন (ডিইডব্লিউ)।

কিউআরএসএএম দ্রুতগতিতে শত্রুপক্ষের আকাশপথে আসা ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করে তা ধ্বংস করতে সক্ষম। অন্যদিকে, ভিএসএইচওআরএডিএস কাছাকাছি আসা যে কোনও শত্রু অস্ত্র বা উড়ন্ত বস্তুকে টার্গেট করে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডিইডব্লিউ, একটি লেজার নির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা শত্রুপক্ষের ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্রকে আলোর বেগে ধ্বংস করতে পারে।


প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই অভাবনীয় সাফল্যের জন্য ডিআরডিও-কে ধন্যবাদ জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘আত্মনির্ভর ভারতের পথে এটি এক বড় পদক্ষেপ। এই সিস্টেম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে চলেছে এবং আকাশে শত্রুদের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করবে।’

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে তৈরি সামরিক উত্তেজনার সময় ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সফল প্রয়োগ দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিল। সেই সময় থেকেই শুরু হয় আরও উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নির্মাণ। ‘সুদর্শন চক্র’ নামের এই নতুন ব্যবস্থা সেই প্রচেষ্টারই ফল, যা ভবিষ্যতে ভারতীয় আকাশসীমাকে শত্রুর যেকোনও আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে।

এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি আরও একধাপ এগিয়ে গেল। শুধু তাই নয়, এর ফলে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগ আরও একবার বিশ্বমঞ্চে নিজেদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রমাণ দিল।