লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ফেরাতে সীমান্ত পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে বৈঠক করল ভারত ও চিন। গত ২৫ অক্টোবর ভারতের মলডো-চুশুল বর্ডার মিটিং পয়েন্টে দুই দেশের সেনাকর্তারা বৈঠক করেন। পারস্পরিক আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা রক্ষার বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সূত্রের খবর, বৈঠক ‘সবিস্তার এবং ইতিবাচক’ হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছিল ভারত এবং চিন। সেই সময় চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, চলতি বছররে শেষে ফের এই বিষয়ে আলোচনা হবে। সেই সময় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠতে থাকে। পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় চিনের সেনা অনুপ্রবেশ করছে বলে অভিযোগ করা হয়। ওই বছরের ১৫ জুন গলওয়ানে চিন হামলা চালায়। তাতে নিহত হন ২০ জন ভারতীয় সেনা। ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয় বলে আন্তর্জাতিক সূত্রে খবর। এর পর থেকেই দুই দেশের সীমান্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর সীমান্তে চলমান উত্তেজনা কমাতে উদ্যোগ নেয় ভারত এবং চিন দুই দেশেই।
গত আগস্ট থেকে দুই দেশের মধ্যে বরফ গলতে শুরু করে। চিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাত বছর পর এটা মোদীর প্রথম চিন সফর ছিল। বৈঠকের ফাঁকেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। চিনের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের তরফে এই বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
সেইমতো ২৫ অক্টোবর নির্ধারিত জায়গায় আলোচনায় বসেন দুই দেশের সেনা কর্তারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, লাদাখ সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে দুই দেশ। পাঁচ বছর বন্ধ থাকার সোমবার, ২৬ অক্টোবর থেকে ভারত এবং চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকেটা স্বাভাবিক হলেও এখনও পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন রেখেছে দুই দেশ।