‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ ৬.৬ লক্ষ টাকা খোয়ানোর পরেই মৃত্যু বৃদ্ধার

প্রতীকী চিত্র

হায়দরাবাদ– ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ভয় দেখিয়ে প্রতারণার শিকার ৭৬ বছরের এক বৃদ্ধা। প্রতারকদের হাতে খোয়ালেন সাড়ে ছয় লক্ষ টাকারও বেশি। আর সেই মানসিক চাপেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। গত সপ্তাহে হায়দরাবাদে ঘটে যাওয়া এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ইতিমধ্যেই তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে সাইবার অপরাধ দমন শাখা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধা পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছিলেন। চলতি মাসের শুরুতে তিনি একটি অজানা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ফোন পান। অপর প্রান্তে থাকা পুরুষ কণ্ঠ নিজেকে বেঙ্গালুরু পুলিশের অফিসার পরিচয় দিয়ে বলেন, এক মানবপাচার মামলায় ওই বৃদ্ধা জড়িত এবং তাঁকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হচ্ছে।

এরপর ভিডিও কলে তাঁকে দেখানো হয় একের পর এক ভুয়ো সরকারি কাগজপত্র, আধার কার্ডে জালিয়াতির অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ইডি, আরবিআই এবং কর্ণাটক পুলিশের নামে কড়া বার্তা ইত্যাদি। তিন দিন ধরে ভিডিও কলে তাঁকে মানসিকভাবে বন্দি করে রাখা হয়। বলা হয়, টাকা না দিলে তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হবে। প্রবল ভয়ে বৃদ্ধা নিজের পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ৬.৬০ লক্ষ টাকা প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।


কিন্তু প্রতারকদের হুমকি থামেনি। টাকা যাওয়ার পরেও তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়নি। বরং ভয় দেখানোর মাত্রা বাড়তেই থাকে। ৮ সেপ্টেম্বর এই প্রবল মানসিক চাপের ফলেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। প্রথমে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যান, পরে বুকে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

বৃদ্ধার মৃত্যু হলেও তাঁর ফোনে আসতে থাকে একের পর এক কল ও হুমকির বার্তা। তখনই পরিবারের সদস্যরা পুরো ঘটনা জানতে পারেন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। হায়দরাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ফোন নম্বর ট্র্যাক করে প্রতারকদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এই ধরনের প্রতারণা রুখতে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।