ওড়িশা সরকারকে ৮২ লক্ষ টাকা জরিমানা হাইকোর্টের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ওড়িশা আদালতের নিশানায় এবার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বুলডোজার। আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে একটি ভবনের উপর বুলডোজার চালিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওড়িশা সরকার। এর শাস্তি হিসেবে সরকারকে ৮২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে ওড়িশা হাইকোর্ট। দেশজুড়ে সরকারের বুলডোজারের দাপাদাপির মধ্যে হাইকোর্টের এই নির্দেশ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

ওড়িশার বালাসোরে এক গোচারণ জমিতে ১৯৮৫ সাল থেকে একটি কমিউনিটি হল ছিল। ১৯৯৯ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পরে সেটি মেরামত করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। ২০১৬-১৮ সালে বিধায়ক তহবিল থেকে সেটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরই মধ্যে নতুন সরকার আসার পর ওই গোচারণের জমিকে বাস্তুজমি করার চেষ্টা শুরু হয়। কমিউনিটি হলটি ভাঙার উদ্যোগ নেয় সরকারি আধিকারিকরা। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের হয় মামলা। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর সরকারের এই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ওড়িশা হাইকোর্ট। তবে আদালতের সেই নির্দেশ অমান্য করে পরের দিনই কমিউনিটি হলে উপর বুলডোজার চালিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত।

কী কারণে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কমিউনিটি হলটি ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা স্পষ্ট করতে পারেনি সরকার। এই কারণে আদালতে সরকারকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়। এরপরই এই মামলায় ক্ষতিগ্রস্তকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। যে আধিকারিক (এসডিএম) ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি মামলার খরচ বাবদ সরকারকে আরও ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। সবমিলিয়ে এই ঘটনায় ৮২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।


বর্তমানে দেশের কয়েকটি রাজ্যে বুলডোজার নীতি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথই এই নীতি সবার আগে চালু করেছিলেন। এরপর অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্য এই নীতি গ্রহণ করে। এই নীতিতে অভিযুক্তের দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগেই তার বাড়িঘর, সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে একাধিকবার সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই নীতি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বন্ধ হয়নি বুলডোজার নীতি। এবার এই নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল ওড়িশা সরকারকে।