নিজের রাজ্য গুজরাটে বড় আইনি জটিলতায় পড়লেন তৃণমূল সাংসদ ও প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। গুজরাট হাই কোর্ট শুক্রবার তাঁকে সরাসরি ‘বেআইনি দখলদার’ আখ্যা দিয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বরোদা পুরসভার জমি অবিলম্বে খালি করতে হবে। প্রয়োজনে পুরসভা বুলডোজার চালিয়ে জমি উদ্ধার করতে পারবে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বরোদার তানাদালজা এলাকায় ২০১২ সালে একটি জমি কেনেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। তার লাগোয়া আরও একটি জমি কেনার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেটি ছিল পুরসভার মালিকানাধীন জমি। সেই প্রস্তাব প্রথমে পুরসভার বৈঠকে ওঠে, পরে রাজ্য সরকার সেই প্রস্তাব বাতিল করে দেয়। জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে পুরসভা কর্তৃপক্ষ পাঠানকে ওই প্রস্তাব দেন। তাঁরা প্রাক্তন ক্রিকেটারকে ওই জমিটি কিনে নিতে বলেন। তার জন্য নিলাম করা হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। প্রতি বর্গমিটারে ৫৭ হাজার ২৭০ টাকা করে জমির দাম ধার্যেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু গুজরাত সরকার পুরসভার সেই অনুমোদন ২০১৪ সালে বাতিল করে দেয়। অভিযোগ, এরপরেই ওই জমি বেআইনিভাবে দখল করে সেখানে পাঁচিল তুলে দেন ইউসুফ।
এ নিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁকে বারবার নোটিস পাঠানো হয়। জমি খালি করতে সতর্কও করা হয় একাধিকবার। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেননি ইউসুফ পাঠান। উল্টে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। অবশেষে বিচারপতি মউনা এম ভট্টের বেঞ্চ শুক্রবার রায়ে জানিয়ে দেয়, একজন জনপ্রতিনিধি ও সেলিব্রিটি হয়েও আইন ভাঙা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। বরং তাঁর দায়িত্ব ছিল সমাজের কাছে সঠিক উদাহরণ স্থাপন করা।
আদালতের নির্দেশ, আর কোনও নোটিস পাঠানো হবে না। ইউসুফ পাঠান যদি জমি খালি না করেন, তবে পুরসভা নিজে থেকে ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে বুলডোজার চালিয়েও জমি দখলমুক্ত করা হবে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর তীব্র হয়েছে। ইউসুফ পাঠানের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তৃণমূল থেকে লোকসভায় জেতার পরই তাঁকে টার্গেট করে এই মামলা নতুন করে তোলা হয়েছে। যদিও আদালতের সাফ নির্দেশ, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন থাকলেও বেআইনি দখলদারি মেনে নেওয়া যায় না।