পাটনায় বিজেপি নেতা খুনে চাঞ্চল্য, শেষকৃত্যে এসে গ্রেপ্তার যুবক

পাটনায় বিজেপি নেতা খুনে এক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বিজেপি নেতা তথা ব্যবসায়ী গোপাল খেমকারের শেষকৃত্যে মালা হাতে হাজির হয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন ওই যুবক।

রবিবার পাটনার গুলবি ঘাটে গোপাল খেমকার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন পাটনার একাধিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। সেই ভিড়েই মালা হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন রোশন কুমার নামে এক যুবক। আচরণে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এবং পরে গ্রেপ্তার করে। রোশন কুমার পাটনার পুনপুন এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে গান্ধী ময়দানের কাছে টুইন টাওয়ার আবাসনে নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে খুন করা হয় গোপাল খেমকাকে। তিনি ওই রাতে বাঁকিপুর ক্লাব থেকে ফিরছিলেন। বাড়ির গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।


প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, অন্তত তিনজন এই খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন সরাসরি খুন করেছেন, বাকি দু’জন গোটা পরিকল্পনায় সাহায্য করেছেন। তদন্তকারীদের অনুমান, একজন ক্লাব থেকে বেরোনোর পর থেকেই গোপালের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলেন, আরেকজন অপেক্ষায় ছিল বাড়ির সামনে। সবুজ সঙ্কেত পেয়ে হামলা চালানো হয়।

গোপাল খেমকা পাটনার একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছিলেন। হাসপাতাল, আবাসন শিল্প সহ একাধিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি, বিজেপির সঙ্গেও তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, খুব শীঘ্রই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকি অভিযুক্তদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। এই ঘটনা ঘিরে ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের তদন্তে নজর রাখছে গোটা শহর।

এই ঘটনার পর বিরোধীরা সরব হয়েছেন বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। ক্ষমতাসীন জেডিইউ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অনেকেই। জেডিইউ এনডিএ-র শরিক, তা সত্ত্বেও বিজেপির অন্দরেই উঠছে প্রশ্ন। গোপালের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান স্থানীয় বিজেপি নেতা রামকৃপাল যাদব। তিনি বলেন, ‘এই খুনের পেছনের কারণ উদঘাটন করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব ওরফে রাজেশ রঞ্জনও ঘটনাস্থলে যান এবং সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্টে বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘বিহারে এখন কেউ নিরাপদ নন। রাজ্য অপরাধীদের বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।’ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।