আজ তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী শিল্পপতি। চারপাশে কড়া নিরাপত্তা বলয় ছাড়া এক মুহূর্তও থাকেন না। কিন্তু ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারির রাতে গৌতম আদানির জীবনে হয়ে উঠেছিল এক দুঃস্বপ্ন। সেই রাতে গুজরাতের আহমেদাবাদের কর্ণাবতী ক্লাব থেকে বেরনোর পর সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু শান্তিলাল প্যাটেল।
ঘটনাটি ঘটে মুহূর্তের মধ্যে। গাড়ি থেকে নামিয়ে দু’জনকে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। অল্প সময়ের মধ্যেই আসে ১৫ কোটি টাকা মুক্তিপণের দাবি। তদন্তে উঠে আসে দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের নাম— ফজলু ওরফে ফজল-উর রহমান এবং মামা ওরফে ভোগীলাল দরজি। অভিযোগ ছিল, এই দুই দুষ্কৃতীই অপহরণের মূল চক্রী। ফজলুকে একসময় দাউদ ইব্রাহিমের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ঘটনার জেরে তোলপাড় হয়ে যায় গুজরাতের ব্যবসায়ী মহল ও প্রশাসন। তবে সবচেয়ে বড় স্বস্তি— অপহরণের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পান আদানি ও তাঁর সঙ্গী। রহস্য রয়ে যায় মুক্তিপণের অর্থ নিয়ে। টাকা দেওয়া হয়েছিল কি না, নাকি কোনও অজ্ঞাত কারণে মুক্তি দেওয়া হয়, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর এখনও মেলেনি।
এই মামলায় ফজলু ও ভোগীলালকে দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকতে হয়। অবশেষে ২০১৮ সালে আহমেদাবাদের একটি বিশেষ আদালত পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাঁদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করে দেয়।
নিজের জীবনের এই চাঞ্চল্যকর অধ্যায় নিয়ে প্রকাশ্যে খুব কমই কথা বলেছেন গৌতম আদানি। তবে একবার তিনি এটিকে জীবনের ‘দুই বা তিনটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার মধ্যে একটি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। আজ তিনি সাফল্যের শীর্ষে, তবু সেই ভয়ঙ্কর রাতের স্মৃতি আজও তাঁকে নাড়া দেয় বলে মনে করে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল।