মর্মান্তিক! বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বাবা ও চার মেয়ের মৃতদেহ

মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজধানী। দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের এলাকার রংপুরি গ্রামের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তি এবং তাঁর চার মেয়ের দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই পাঁচজন আত্মহত্যা করেছেন।

শুক্রবার প্রতিবেশীরা ওই ফ্ল্যাট থেকে অস্বাভাবিক গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙলে গোটা ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই পরিবারের সদস্যদের কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছিল না। পুলিশের বক্তব্য, ওই ফ্ল্যাটের আশপাশের এলাকার লোকজন খবর দেন। পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে, পুলিশ প্রথমে ডাকাডাকি করে। কিন্তু কোনও সাড়া না মেলায় দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। দরজা ভাঙতেই তদন্তকারী আধিকারিকেরা চমকে যান। একটি ঘরে থাকা খাটের ওপর থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। আরেকটি ঘর থেকে চার তরুণীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।


মৃত ব্যক্তির নাম হীরালাল। তাঁর চার মেয়ের নাম – নীতু (১৮), নিশি (১৫), নীরু (১০) এবং নিধি (৮)। একই ঘর থেকে তাঁদের সকলের দেহ উদ্ধার হয়েছে।

হীরালাল গত ২৮ বছর ধরে বসন্ত কুঞ্জের ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইনজুরি সেন্টারে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেছেন। মাসে ২৫ হাজার টাকা রোজগার করতেন তিনি। জানুয়ারি থেকে হীরালাল কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। তাঁর দুই মেয়ে নীরু ও নিধি বিশেষভাবে সক্ষম ছিল। ওই ফ্ল্যাটটি হীরালাল ভাড়া নিয়েছিলেন।

দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার রোহিত মীনা জানিয়েছেন, বসন্ত কুঞ্জ দক্ষিণ পুলিশ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

ক্রাইম টিম, সিনিয়র এফএসএল টিম এবং সফদরজং হাসপাতাল থেকে ফরেনসিক বিভাগের সিনিয়র ডাক্তারদের ঘটনাস্থল এবং মৃতদেহ পরিদর্শনের জন্য ডাকা হয়েছিল। নিহতদের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ঘরের ভেতর থেকে তিন প্যাকেট বিষ, পাঁচ গ্লাস ও এক চামচ সন্দেহজনক তরল পাওয়া গিয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মৃতের ভাই মোহন শর্মা ও তাঁর শ্যালিকা গুড়িয়া শর্মা। তাঁরা জানান, স্ত্রীর মৃত্যুর পর হীরালাল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ রাখত না। সবসময়ই কোনও না কোনও হাসপাতালে মেয়েদের চিকিত্সা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন তিনি। মৃত ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারকে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশীরা দেখেছিলেন।

পুলিশ এখনও সুইসাইড নোটটি খুঁজে পায়নি। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মেয়েদের অক্ষমতার কারণে হীরালালা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।