ফের কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের বৈঠক ৯ ডিসেম্বর

কৃষক বিক্ষোভ (Photo: IANS)

পঞ্চম দফার বৈঠকও নিষ্ফলা। কৃষি আইন নিয়ে কোনও সমাধানে আসতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার। তাই ৯ ডিসেম্বর বুধবার কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আরও একদফা বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। শনিবার বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সূত্রের খবর, আগামী বুধবার দু’পক্ষের মধ্যে যে বৈঠক হওয়ার কথা তাতে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করা হবে, নাকি সেগুলি সংশােধন করা হবে, ওই দিনই তা চূড়ান্ত হতে পারে। তবে নিজেদের দাবি থেকে একচুলও নড়তে নারাজ আন্দোলনকারী কৃষকরা। কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে তাঁরা জানিয়েছে, এ নিয়ে কেন্দ্রকেই সমাধানসূত্র বার করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তুলে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। 

সুত্রের আরও খবর, এ দিন বৈঠকে ফের কৃষি আইন বাতিলের দাবি তােলেন কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা। কিন্তু আইন প্রত্যাহারে নারাজ কেন্দ্র। সে কথাও সরকারের তরফেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। কিছু সংশােধন করার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কৃষকরাও নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন। ফলে আলােচনায় কোনও রফাসূত্র মিলল না। 


সূত্রের খবর, বৈঠকের মাঝে ওয়াক আউটেরও হুঁশিয়ারি দেন কৃষক প্রতিনিধিরা। তাঁদের দাবি ছিল, আর আলােচনা চাই না। সরকার দাবি মানবে কি না তা সাফ জানিয়ে দিক। যতদিন সরকার না মানবে ততদিন রাস্তায় থাকারও হুশিয়ারি দেন তাঁরা। পালটা শিশু ও বয়স্কদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার আরজি জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। তাঁদের সমস্ত কথাও কেন্দ্র সরকার শুনতে রাজি বলেও জানান। তাতেও চিড়ে ভেজেনি। কৃষক সংগঠনের তরফে জানানাে হয়, তাঁদের দাবি না মানলে চাষাবাদের কাজ শুরু করবেন না তাঁরা।

অবশেষে ফের এক দফা আলােচনার সিদ্ধান্তে আসে দুপক্ষই। কৃষক সংগঠেনর তরফে জানানাে হয়েছে, এমএসপি নিয়ে আলােচনা হয়েছে। আইন সংশােধনী নিয়েও কথা হয়েছে। কেন্দ্র রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে নয়া প্রস্রাবের খসড়া তৈরি করবে। সে খসড়া কৃষকদের পাঠানাে হবে। তবে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় চাষিরা। 

প্রসঙ্গত, এদিন বৈঠকের আগে সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির বাসভবনে গিয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল এবং কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তােমর। 

সূত্রের খবর, কৃষকদের দাবি মেনে নয়া কৃষি আইনে সংশােধনী আনতে পারে মােদি সরকার। বিলে কী ধরনের সংশােধনী আনা হতে পারে, তা নিয়েই মােদির সঙ্গে আলােচনা করেন অমিত-রাজনাথরা। এরপর বৈঠকে কৃষকদের লিখিত প্রস্তাা দেওয়া হয় বলেই সূত্রের খবর। সেই প্রস্তাব নিয়ে আলােচনাও হয়। কিন্তু শেষমেশ বরফ গলেনি। কৃষকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন। তাঁরা ওই বিলের ৩৯ টি টি তুলে ধরেন। এই সময় দু’পক্ষই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে।

যদিও কেন্দ্রের তরফে কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের চা এবং খাবার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আগের দিনের মতােই প্রত্যাখ্যান করেন প্রতিনিধিরা। তাঁরা নিজেদের আনা চা এবং খাবার খান। তাঁদের একমাত্র দাবি, এই আইন প্রত্যাহার করতে হবে। এর পরই কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দেন কৃষকরা। 

কৃষকরা বলেন, সমাধানসূত্র কেন্দ্রকেই বার করতে হবে। এদিকে, এদিন দুপুরে বিজ্ঞান ভবনে বৈঠক চলার সময় কৃষকদের একটি দল গ্রেটার নয়ডা দিয়ে দিল্লিতে ঢােকার চেষ্টা করে। কিন্তু তাঁদের যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে আটকে দেওয়া হয়।

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের রাজধানীর সিংঘু, অচণ্ডী, লামপুর, পিয়াও মানিয়ারি এবং মঙ্গেশ সীমানা এখনও বন্ধ ই রয়েছে। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’দিক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের বলা হয়েছে, আউটার রিং রােড এবং জিটিকে রােডও এড়িয়ে যেতে। সাফিয়াবাদ, ধানসা, কাপাসেরা, রাজোক্রি, লাম বিহার এবং দোঁন্দেরার রাঙ্গা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।