থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনরত কৃষক’দের

কৃষক আন্দোলন (File Photo: AFP)

কনকনে ঠান্ডার মধ্যে বিক্ষোভের সুর চড়িয়ে রীতিমতাে ‘থালি বাজিয়ে’ প্রধানমন্ত্রী মােদির বিরুদ্ধে সরব হলেন আন্দোলনরত কৃষক’রা। রেডিওতে প্রধানমন্ত্রী মােদির ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান চলাকালীন রাজধানীর সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষক’রা থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ দেখান। তারা স্লোগানও দেন। সিঙ্ঘু বর্ডার, পাঞ্জাবের ফরিদকোট ও হরিয়ানার রােহতকে আন্দোলনরত কৃষকা থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ করেন। দিল্লি চলাে কর্মসূচীতে মূলত পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে আসা কৃষকরা এক মাস ধরে নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে আন্দোলনে বসেছেন। 

স্বরাজ ইন্ডিয়া চিফ যােগেন্দ্র যাদব বলেন, ‘মন কি বাত অনুষ্ঠানে থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ দেখানাের ঘােষণা আগের রবিবার করা হয়েছিল।’ তিনি বলেছিলেন, ‘২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মােদি যখন মন কি বাত অনুষ্ঠান করবেন, দেশের আন্দোলনরত কৃষকরা তখন বলবেন, আপনার মন কি বাত শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আপনি কখন আমাদের মন কি বাত শুনবেন? তাই আমরা থালা বাজাব যাতে প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত অনুষ্ঠানের শব্দ আমাদের  কানে এসে না পৌছয়।’

করােনা যােদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মােদি কাসর-ঘন্টা-থালা বাজানাের কথা বলেছিলেন। কেন্দ্রে সঙ্গে পাঁচদফা বৈঠক হওয়ার পরও সমাধান হয়নি। কমিটি গঠন করে ইস্যুটি নিয়ে চিন্তা-ভান্নার কথা বলা হয়েছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, আমাদের মনে হচ্ছে না যে কৃষকরা আপনাদের কথা মানবে। কমিটি পুরাে বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবে। 


৭২ তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মােদি প্রতিবারের মতাে দেশবাসীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তাঁর কথায়, ‘আগামি চারদিন পর নতুন বছর শুরু হবে। পরের মন কি বাত প্রােগ্রাম নতুন বছরে হবে। নতুন বছরে আমরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাই, কিন্তু আগামি বছর আমরা দেশকে নতুন লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানাব। 

চলতি বছরের শেষ মন কি বাত অনুষ্ঠানে শিখ ধর্মগুরুদের আত্মত্যাগের কাহিনী বর্ণনা করার পাশাপাশি গুরু গােবিন্দ সিং ও গুরু তেগ বাহাদুরকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। তিনি বলেন, শিখ ধর্মগুরুদের চরম আত্মত্যাগের কাহিনী আমাদের সকলের জানা। তারা অত্যাচারী ও নির্যাতনকারীদের অপকর্মের হাত থেকে আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করেছেন। 

পাশাপাশি গুরু গােবিন্দ সিং জি’র দুই পুত্র সাহিবজাদে জোরাওয়ার সিং জি ও ফতেহ সিং জি’র আত্মত্যাগের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে রাকাবগঞ্জ ও রুদ্বারে গিয়ে শ্রী গুরু তেগ বাহাদুর জি’কে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি।’

মন কি বাত অনুষ্ঠানে শিখ সম্প্রদায়ের আত্মত্যাগের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মােদি গুরু গােবিন্দ সিং’র কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘গুরু গােবিন্দ সিংয়ের পরিবারের আত্মত্যাগ মানব সভ্যতার কাছে একটা দৃষ্টান্ত স্বরূপ। আমাদের সংস্কৃতি-সভ্যতাকে রক্ষা করার কাজ করেছে এই পরিবার। গুরু গােবিন্দ সিং জি’র আত্মত্যাগের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই মাসে বহু মানুষ মেঝেতে শুয়ে কাটান। 

শিখ ধর্মগুরুদের স্তুতি গেয়ে লক্ষণীয়ভাবে  কৃষক আন্দোলন নিয়ে তিনি কোনও কথা বললেন না। শিখ ধর্মগুরুদের অবদান ও তাদের আত্মত্যাগের বিষয়ে কথা বললেও শিখ ধর্মালম্বী কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে তিনি কথা বললেন না। তাদের সমস্যা নিয়েও কথা বললেন না।