কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকেই ‘থ্রি লেয়ার মাস্ক’ পরতে হবে, বলল হু

প্রতিকি ছবি (File Photo: AFP)

কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে পারস্পরিক দূরত্ব বা সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি প্রয়োজন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা। তবে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলা যেখানে কঠিন, সেখানে মাস্ক ব্যবহারেরই পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।

কোভিড সংক্রমণ যেসব এলাকায় বেশি ছড়িয়েছে অর্থাৎ হটস্পট চিহ্নিত এলাকা বা দোকান বাজার, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, ধর্মীয় স্থান ইত্যাদি জনবহুল জায়গা যেখানে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলা প্রায় অসম্ভব, সেই সব জায়গায় কী ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা নিরাপদ তারই নতুন গাইডলাইন দিয়েছে হু।

মাস্ক ব্যবহারের গাইডলাইনে হু প্রথম কী বলেছিল?
শুক্রবার রাতে হু-প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস প্রেস কনফারেন্স করে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিলেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে শারীরিক দূরত্ব ও পরিচ্ছন্নতার অভ্যেস গড়ে তোলার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের কথাও বলেন তিনি।


হু-এর প্রথম দফার নির্দেশিকায় বলা হয়, যেসব এলাকায় সংক্রমণ খুব বেশি হারে ছড়িয়েছে সেখানে মেডিক্যাল মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। বিশেষত গোষ্ঠী সংক্রমণ যেখানে ছড়িয়েছে সেখানে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ ব্যক্তিদের এই ব্যাপারে বেশি সচেতন থাকতে হবে। করোনা রোগীদের সংস্পর্শে থেকে চিকিৎসা করছেন যে ডাক্তার নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরা, তাঁদের মেডিক্যাল মাস্ক পরা জরুরি।

আপডেটেড গাইডলাইনে কী বলা হল?
নতুন আপডেটেড গাইডলাইন হু বলছে, পাবলিক প্লেসে, গণপরিবহনে, বা জনবহুল এলাকায় যেখানে শারীরিক দুরত্ববিধি মেনে চলা সবসময় সম্ভব নয়, সেখানে সকলকেই ফেবরিক মাস্ক (নন-মেডিক্যাল) পরতে হবে।

এই ফেবরিক মাস্ক কী?
মেডিক্যাল বা সার্জিক্যাল মাস্কে একটাই প্লেন লেয়ার থাকে। সাধারণত মসৃণ সারফেস। তবে ফেবরিক মাস্কে তিনটি ভিন্ন উপাদানের বা মেটিরিয়ালের লেয়ার থাকে। এই ধরনের মাস্ককে ‘থ্রি- লেয়ার’ মাস্ক বলা হয়। এর একটা বাইরের স্তর থাকে যেটা ওয়াটারপ্রুফ সিন্থেটিক মেটিরিয়ালে তৈরি। সাধারণত পলিপিলিন দিয়ে তৈরি হয় এই আউটার লেয়ার। এই পলিপিলিনের কাজ হল ভাইরাস ড্রপলেটকে আটকে দেওয়া। এই উপাদানকে ভেদ করে ভাইরাস ড্রপলেট আর নাক বা মুখ অবধি যেতে পারে না।

আউটার লেয়ারের ভেতরেও থাকে আরেকটা পলিপ্রপিলিনের মিডল লেয়ার। এর কাছ ছাঁকনির মতো। কোনও কারণে যদি ভাইরাস ড্রপলেট ভেতরে ঢুকে আসে তাকে ছেঁকে বার করে দিতে পারে এই লেয়ার। আর তৃতীয় লেয়ার বা যে অংশটা মুখ নাকের কাছে থাকবে সেটা তৈরি হয়েছে সুতির উপাদান দিয়ে যা চূড়ান্ত পর্যায়ে ফিল্টারের কাজ করবে পাশাপাশি ত্বকের জন্যও আরামদায়ক।

তবে হু-এর আপডেটেড গাইডলাইনে এটাও কলা হয়েছে যে, ফেবরিক মাস্ক ব্যবহার করতে হলেও পরিচ্ছন্নতার দিকটা মাথায় রাখতে হবে। মাটিতে বা অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাস্ক ফেলে রেখে সেটা ব্যবহার করলে সে কন্ট্যামিনেশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নন মেডিক্যাল মাস্কও সময় সময় বদলাতে হবে। ব্যবহার করা মাস্ক পরিষ্কার করতে হবে। কোনও কারণে মাস্ক মাটিতে পড়ে গেলে বা ধুলোবালি লাগলে সেটা ব্যহার করা যাবে না। মাস্ক ব্যবহারের হ্যান্ড-হাইজিনের দিকটা মাথায় রাখাও একান্ত জরুরি। বারে বারে হাত ধুয়ে নিতে হবে।